ঢাকা মেট্রো রেলের ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত।
ছুটতে ছুটতে ছিটকে যাওয়াটা কষ্টের। সাময়িক বিরতিও যন্ত্রণার। গতি হারালেই দুর্গতি। প্রশ্ন অনেক। কেন থামল, ফের কবে চলবে। ঢাকার মেট্রো রেলের কাজ চলছিল অবাধে। বাংলাদেশের বিশ কোটি মানুষের স্বপ্নের আশ্বাস। দৃঢ় বিশ্বাস, মাটির নীচে রেল চললে সমতলে যানজটের বিভীষিকা থেকে মুক্তি। সড়ক, পরিবহণ, সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সেটা জানতেন বলেই কাজে দেরি করেননি। সরকারি সব কিছুই জোগান দিয়েছেন দ্রুত। প্রশাসনিক দায়িত্ব ছাড়াও তাঁর কাঁধে দলের গুরু দায়িত্ব। তিনি আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরের ধাপেই তাঁর স্থান। সামান্য গাফিলতিতে সরকার নয়, দলও ভুগবে। সমালোচনার ঝড় উঠবে। বিরোধীরা ছেড়ে কথা বলবে না।
সে ভুল করেননি কাদের। শুরু থেকে কাজ চালিয়েছেন ঘড়ি ধরে। সময়কে পিছলোতে দেননি। প্রতিটি মুহূর্ত কাজের নিরিখে মূল্যবান করে তুলেছেন। সাবলীল কর্মধারায় আচমকা বেয়াড়া বাঁক। জঙ্গিদের টার্গেট মেট্রো রেলের জাপানি উপদেষ্টারা। গুলশনের হোটেল আর্টিজানে তাঁরা যখন অবসর বিনোদনে, আচমকা জঙ্গিরা চড়াও। পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি। রক্ত স্রোতে ভেসে যাওয়া। ছয় কৃতী জাপানির মর্মান্তিক মৃত্যু। শঙ্কা তখন জাপানকে নিয়ে। যেখানে কাজের নিরাপত্তা নেই সেখানে তারা লোক পাঠাবে কেন। বধ্যভূমিতে কাজের জন্য যাওয়ার পরিণতি তো এই। উদ্বিগ্ন হাসিনাও। তাহলে এত বড় স্বপ্নের প্রোজেক্ট কি আটকে যাবে! পাতাল রেলের পরিকল্পনা পাতালেই তলাবে! ভুল ভাঙলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। তিনি হাসিনাকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, ঢাকার মেট্রো রেল থেকে হাত গুটোবে না জাপান। যেমন চলছিল তেমনই চলবে। জাপান আর্থিক সাহায্যও অব্যাহত রাখবে। জাপানের কথায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন হাসিনা।
আরও পড়ুন: গিলানির বিরুদ্ধে এফআইআর, এনআইএ তল্লাশি কাশ্মীর, দিল্লিতে
নৃশংসতার পরেও কাজ থামল না। চলল পুরোদমে। মাঝখান থেকে একটু দেরি হয়ে গেল। প্রোজেক্ট পিছোল ছ'মাস। ২০১৯-এ কাজ শেষ করার কথা ছিল। হয়ত একটু দেরি হবে। তা হোক। এত কাণ্ডের পর কাজটা যে হচ্ছে তাই না কত।
আপাতত নজর স্টেশন নির্মাণ আর পূর্ত কাজের দিকে। ডিপোর পূর্ত কাজ চলছে নির্বিঘ্নে। উত্তরা থেকে আগারগাঁও ভায়াডাক্ট বা উপর দিয়ে চলার রেলপথ আর ৯টি স্টেশন হচ্ছে। কাজের দায়িত্বে ইতালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড আর সিনোহাইড্রো কর্পোরেশন লিমিটেড। নির্দিষ্ট সংস্থার সঙ্গে চুক্তি সইয়ের পরই কাজ। বাস্তবায়িত হবে আটটি প্যাকেজ। এর মধ্যে ২, ৩, ৪-এর চুক্তি হয়েছে। উত্তরা আগারগাঁওয়ের দূরত্ব কম নয়। ১২ কিলোমিটার। ডিপোর কাজে খরচ ১ হাজার ৫৯৬ কোটি টাকা। বাকি কাজে ৪ হাজার ২৩০ কোটি টাকা। টাকায় আটকাবে না। অর্থের জোগানে বাধা নেই। কাজের গতিতেও লেট মেক-আপ করার প্রবণতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy