প্রতীকী ছবি।
এখানকার ওখানকার ভালটা নিয়ে ভারতীয় সংবিধান। ব্রিটেনের সংসদীয় ব্যবস্থা; আমেরিকার মৌলিক অধিকার, বিচার ব্যবস্থা; কানাডার কোয়াসি ফেডারেল গঠন; অস্ট্রেলিয়ার যৌথ তালিকা; রাশিয়ার প্রস্তাবনা, মৌলিক দায়িত্ব; আয়ার্ল্যান্ডের নির্দেশমূলক নীতি; জাপানের রাজনীতির ভ্রাতৃত্ব বোধ ভারতের সংবিধানকে সমৃদ্ধ করেছে। এমন বিশাল সংবিধান বিশ্বে বিরল। একত্রিত করতে সময় লেগেছে অনেক। ১৯৪৭-এ স্বাধীনতার পর তিন বছরের পরিশ্রম। ১৯৫০-এর ২৬ জানুয়ারি সংবিধান কার্যকরী। বাংলাদেশের বেলায় এতটা সময় দিতে হয়নি। ভারতীয় সংবিধান থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সারসংক্ষেপ পেয়েছে। বাংলাদেশের সঙ্গে পেরে না উঠে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ এ কে নিয়াজি ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্থনের নথিতে সই করতেই বিজয় উৎসবের সূচনা। ১৯৭২-এর ১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১১ মন্ত্রী নিয়ে শপথ গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি হন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। সাত মাস বাদে ৪ নভেম্বর জাতীয় সংসদে সংবিধান গৃহীত।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দর থেকে উদ্ধার প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটির চোরাই সোনা
ভারতের দেওয়ানি-ফৌজদারি আইনের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগ সুবিদিত। বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়ায় আইনজীবীরা সওয়াল জবাবের সময় ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের উল্লেখে অনেক সময়ই যুক্তিকে শক্ত করার চেষ্টা করেন। দু'দেশের আইনি যোগাযোগ এখন আরও নিবিড় হবে। ভারত সরকারের আইন ও বিচার মন্ত্রকের সঙ্গে বাংলাদেশের আইন, বিচার আর সংসদ বিষয়ক মন্ত্রকের সমন্বয় বাড়ান হচ্ছে। এমনিতেই ভারতের সেমিনারে যোগ দিয়ে ভাবনার আদান প্রদান করেন বাংলাদেশের আইনজীবীরা। এ বার বাংলাদেশের জেলা স্তরের বিচারকরা ভারতে যাবেন প্রশিক্ষণ নিতে। সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন নিয়ে ভারতের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল অ্যাকাডেমি তাঁদের তালিম দেবে। কোর্স দু'সপ্তাহের। প্রথম পর্বে ১০টি ব্যাচে ৩০ জন করে বিচারক থাকবেন।
বাংলাদেশের স্থানীয় স্তরে বিচারক রয়েছেন ১ হাজার ৫১৯ জন। তার মধ্যে জেলা জজ ১৮১, অতিরিক্ত জেলা জজ ২২০, যুগ্ম জেলা জজ ৩৩৩, সিনিয়র সহকারী জজ ২৬০, সহকারী জজ ৪৫০। বাংলাদেশের দেড় হাজার বিচারককে ছয় মাস ধরে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ দেবে ভোপালের ন্যাশনাল জুডিসিয়াল একাডেমি। প্রশিক্ষণের সিলেবাসে থাকছে দেওয়ানি-ফৌজদারি আইন, মানবাধিকার আইন, মেডিকো-লিগ্যাল জুরিসপ্রুডেন্স, পরিবেশ আইন, চুক্তি আইন, আদালতের ব্যবস্থাপনা।
বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিংহ গত নভেম্বরে দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলে ট্রেনিংয়ের বিষয়টি পাকা করেন। বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার দক্ষ জুডিসিয়ারি গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই লক্ষ্যেই বাংলাদেশের জেলা বা স্থানীয় বিচারকদের ভারতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে। ভারতের প্রচলিত আইনের সঙ্গে বাংলাদেশের আইনের এতটাই মিল যে, দ্বিপাক্ষিক আইনি চর্চায় কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy