Advertisement
১৮ নভেম্বর ২০২৪

জঙ্গিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ হাসিনার

জাঁকজমকের সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের কুর্নিশ ও প্রশংসা বর্ষণের মধ্যে দেশবাসীকে এমন এক দারিদ্র ও অপুষ্টিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখালেন আওয়ামি লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা, যেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনও ঠাঁই হবে না।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কুদ্দুস আফ্রাদ
ঢাকা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০৩:০৮
Share: Save:

জাঁকজমকের সম্মেলনে বিদেশি অতিথিদের কুর্নিশ ও প্রশংসা বর্ষণের মধ্যে দেশবাসীকে এমন এক দারিদ্র ও অপুষ্টিমুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখালেন আওয়ামি লিগ নেত্রী শেখ হাসিনা, যেখানে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের কোনও ঠাঁই হবে না। ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা দলের জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশে বললেন— ‘‘আপনাদের এলাকায় কত জন নিঃস্ব-রিক্ত মানুষ আছে, তার তালিকা দিন। আমরা তাদের বিনে পয়সায় ঘর করে দেব। প্রতিটি মানুষের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করব। বাংলাদেশ থেকে পুষ্টিহীনতা দূর করব।’’

নির্বাচন বয়কট করে, জামাতে ইসলামির হাত না-ছেড়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে কার্যত অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। দেশজুড়ে এখন তা-ই প্রবল প্রতাপ শাসক দল আওয়ামি লিগের। শনিবার থেকে শুরু দু’দিনের সম্মেলনও মনে করিয়ে দিচ্ছে চিনের কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসকে। খালেদা জিয়া-সহ বিএনপি নেতৃত্বও সম্মেলনে আমন্ত্রিত ছিলেন। অনেকে বলছেন, আমন্ত্রণ গ্রহণ করে হাসিনার দলের সম্মেলনে হাজির হলে প্রচারের সবটুকু আলো টেনে নেওয়ার সুযোগ ছিল খালেদার। কিন্তু আসেননি তিনি। পাঠাননি দলের কোনও নেতাকেও। তবে তাঁদের জোটশরিক ছোট দলের অনেক নেতাকে দেখা গিয়েছে শাসক দলের সম্মেলন মঞ্চে। এসেছেন ১১টি দেশের নানা দলের ৫৫ জন প্রতিনিধি। সব চেয়ে বেশি অতিথি গিয়েছেন ভারত থেকে। প্রথম দিনে সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তৃতা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রতিবেদন পেশের পরে ছিল বিদেশি অতিথিদের ভাষণ পর্ব। শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করে তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা তৈরির কাজ করে চলেছেন শেখ হাসিনা। ডিজিট্যাল বাংলাদেশ নামে নতুন আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার সূচনা করেছেন তিনি।’’ এর পরেই ডাক পান সিপিএমের পলিটব্যুরোর সদস্য বিমান বসু। তিনি বলেন, ‘‘জঙ্গিবাদ দমনে শেখ হাসিনার নেতৃত্ব যে ভূমিকা নিয়েছে, গোটা বিশ্ব তাকে কুর্নিশ করছে। তাঁর দৃঢ় মনোবলের কারণে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের নতুন পরিচিতি উঠে এসেছে।’’ বিমানবাবু বলেন, ভারতের সঙ্গে জমির বিবাদ মিটে গিয়েছে। জলের বিবাদও অচিরেই মিটে যাবে বলে আশা করা যায়। কংগ্রেসের তরফে গোলাম নবি আজাদ ও বিজেপির প্রতিনিধি দলের নেতা বিনয় সহস্রবুদ্ধে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের উন্নয়নে শেখ হাসিনার ভূমিকার কথা বলেন। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ ছাড়া চিন, জাপান, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইতালির বিভিন্ন দলের নেতারাও হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হন। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মোকাবিলায় তাঁর ব্যক্তিগত সাহস ও সরকারের কঠোর মনোভাবের কথা সকলে উল্লখ করেন।


ঢাকায় আওয়ামি লিগের সম্মেলনে তৃণমূল প্রতিনিধি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রাচীনতম সংগঠনগুলির একটি আওয়ামি লিগ। আওয়ামি লিগের জন্যই আমরা বাঙালি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে— সবেতেই নেতৃত্ব দিয়েছে এই রাজনৈতিক দল।’’ হাসিনা জানান, এই উদ্যানেই স্বাধীনতার জন্য চূড়ান্ত লড়াইয়ের ঘোষণা করেছিলেন মুজিবুর রহমান। আজ সেই উদ্যানেই উন্নত-আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের শপথ নিচ্ছেন হাজার হাজার দেশবাসী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘আজ এ দেশের সামনে চ্যালেঞ্জ দারিদ্র আর অপুষ্টি। এক সময়ে বাংলাদেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ ছিলেন দারিদ্র সীমার নীচে। এখন তা কমে ২২ শতাংশে এসেছে। কিন্তু এখনও বহু মানুষ দরিদ্র।’’ তিনি জানান, দারিদ্র মুছে গেলে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসও বিদায় নেবে বাংলাদেশ থেকে। নতুন বাংলাদেশে সন্ত্রাসের কোনও স্থান হবে না।

এ দিন সকাল ১০টায় সম্মেলেন শুরুর কথা থাকলেও আটটার মধ্যে সম্মেলনের দর্শক আসন ভরে যায়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ৬০ হাজার মানুষের খাবার ব্যবস্থা করে হয়েছিল। এ দিন সাধারণ প্রতিনিধি হিসেবে সম্মেলনে এসেছিলেন হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। কর্মীদের দাবি মেনে মঞ্চে এনে বসানো হয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজিট্যাল উপদেষ্টা শেখ পরিবারের এই তৃতীয় প্রজন্মকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Hasina bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy