ছবি: সংগৃহীত
বর্ষপঞ্জির হিসেবে ঢাকায় বসন্তের প্রথম দিন ছিল আজ, মঙ্গলবার। সে কারণেই বসন্তবরণে ঢাকা সেজেছে উৎসবের আমেজে। বাসন্তী আর লাল পোশাকে পথে পথে তরুণ-তরুণীরা, পিছিয়ে নেই শিশু এবং বয়স্করাও।
ঋতুর পালাবদলে শীত পেরিয়ে বসন্তের প্রথম দিনটি উৎসবপ্রেমী বাঙালি বসন্ত বরণের উত্সবে মেতেছে নগরজুড়ে। বাসন্তী রঙা শাড়ি, মাথায় ফুলের মুকুট, হাতে-গলায় বসন্ত বরণের নানা সাজ। হাল্কা কুয়াশাঢাকা ভোর থেকেই সরব রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে একুশের বইমেলা বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা মুখর হয়ে ওঠে এই উত্সবের আমেজে।
বসন্ত উদযাপনের প্রস্তুতি ছিল পোশাক, ফুল ও মিষ্টির দোকানগুলোতেও। বসন্তের অনুষঙ্গ দিয়ে পসরা সাজিয়েছেন দোকানিরা। সব বয়স, শ্রেণি ও নানা পেশার মানুষের ভিড়ে জমজমাট ছিল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা।
বাংলাদেশে একটা সময় ছিল যখন সন্ত্রাসবাদীদের চোখ রাঙানিতে এ সব অনুষ্ঠান করা প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তাদের তৎপরতা আর চোখে পড়ছে না। ফলে বাঙালির প্রাণের উৎসবগুলো আবার ফিরে এসেছে চিরকালের আমেজ নিয়ে।
অন্যান্য বছরের মতো এ বারেও জাতীয় বসন্ত উদ্যাপন পরিষদ এ দিন সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় আয়োজন করেছিল বসন্ত উৎসব। রাগ ‘বসন্ত বাহারের’ মূর্ছনায় উৎসবের সূচনা হয়। তার পরই গান, কবিতা আর সম্মিলিত নাচ। এরপর নানা উপাচারে বসন্ত বন্দনায় সামিল হন নগরবাসী। ধ্রুপদী নৃত্য, বসন্তের কবিতা আবৃত্তি, রবীন্দ্র সঙ্গীতে চলে বসন্তের আগমনী বন্দনা।
উৎসেব অংশগ্রহণকারী শরিফুল ইসলাম বলেন, “যান্ত্রিক জীবনে টানাপড়েনের অন্ত নেই। সেখানে এই বসন্ত উৎসব আনন্দ বার্তা নিয়ে আসে। আমরা ছেলেমেয়েদের জানাতে পারি, বাংলাদেশ কত সমৃদ্ধ।” ফারিহা জামানের মতে, নাগরিক জীবনের ব্যস্ততায় বন্দি জীবনে বাঙালির চিরায়ত উৎসবগুলো আমাদের শিকড়ের কথা মনে করিয়ে দেয়।
এ বারেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি ছিল রাখিবন্ধন পর্ব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এক তরুণের হাতে রাখি পরিয়ে এক তরুণী বলেন, “বন্ধুরা মিলে এ নগরকে ফুলে-সবুজে আরও সমৃদ্ধ করে তুলতে চাই।” উৎসবের মঞ্চে সঙ্গীত পরিবেশন করেন মিতা হক, প্রিয়াঙ্কা গোপ, বুলবুল ইসলাম, বিমান চন্দ্র মিস্ত্রি। সমবেত সঙ্গীত পরিবেশন করেন সুরতীর্থ, নজরুল সঙ্গীত শিল্পী সংস্থার শিল্পীরা।
অন্য দিকে, পুরানো ঢাকার লক্ষ্মীবাজারের বাহাদুর শাহ পার্ক, ধানমণ্ডির রবীন্দ্র সরোবর, উত্তরার রবীন্দ্র সরণি মুক্তমঞ্চেও অনুষ্ঠিত হয় বসন্ত উৎসব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy