প্রতীকী ছবি।
২০১৬ সালে রাজধানী ঢাকা সহ বেশ কিছু এলাকায় জঙ্গি দমনে একাধিক সফল অভিযান চালিয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশের জঙ্গি দমনে বিশেষ ইউনিট কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)। আর সে সফলতার ধারাবাহিকতায় এবার কেবল রাজধানী নয়, সারাদেশেই জঙ্গি দমনে এই বিশেষ ইউনিটের কার্যক্রম সম্প্রসারিত করতে চায় পুলিশ।
বর্তমান বাস্তবতায় জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সিটিটিসি আইনি কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে একক ইউনিট হিসেবে এখন সারাদেশে কাজ করতে চায়। আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ উপলক্ষে বাহিনীর পক্ষ থেকে একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে।
সোমবার শুরু হয়েছে পাঁচদিনব্যাপী পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭। এবারের মূল প্রতিপাদ্য- 'জঙ্গি মাদকের প্রতিকার, বাংলাদেশ পুলিশের অঙ্গীকার।' রাজধানী ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন্স মাঠে বর্ণাঢ্য পুলিশ প্যারেডের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিগত বছরের মতো এবারও পুলিশ বাহিনীর জন্য নানা দাবি তুলে ধরবেন মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা। বাহিনীর সব পর্যায়ের সদস্যদের জন্য ঝুঁকিভাতা ও আরও নতুন পদ সৃষ্টির দাবি আলোচনায় উঠে আসতে পারে। পুলিশ সপ্তাহের নানা আয়োজনে গত এক বছরের কার্যক্রম পর্যালোচনা করে পরবর্তী বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়।
পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ উপলক্ষে এবার যে ১৩২ জন পুলিশ পদক পাচ্ছেন তাদের মধ্যে ৬৭ জনই জঙ্গিবিরোধী অভিযানে সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কারণে মনোনীত হয়েছেন। পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে সিটিটিসির ২১ সদস্য রয়েছেন।
আরও পড়ুন: অশালীন আচরণ তরুণীর সঙ্গে! গ্রেফতার বাংলাদেশি ক্রিকেটার সানি
কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সারাদেশের জঙ্গি দমনে 'জিরো টলারেন্স' নীতি গ্রহণ করেছে বর্তমান সরকার। এই নীতি বাস্তবায়নে নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন সাহসী পুলিশ সদস্যরা। নবগঠিত ইউনিট হিসেবে অনেক সীমাবদ্ধতা থাকলেও সিটিটিসি সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
জানা গেছে, সিটিটিসির আইনি কাঠামো এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তাছাড়া এ ইউনিটের যানবাহন সংকটও রয়েছে। পুলিশের সিটিটিসি ইউনিটের কার্যক্রম সারা দেশে পরিচালনা করতে হলে পুলিশ সদর দপ্তরের আওতাধীন একটি স্বতন্ত্র ইউনিট হিসেবে কার্যক্রম চালাতে হবে। চলতি পুলিশ সপ্তাহে বাহিনীর পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে সিটিটিসির কার্যক্রম শুরু করার দাবি উঠতে পারে।
পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭ উদ্বোধনে অংশ নিয়ে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেন্টার, সাইবার ট্রেনিং সেন্টার এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও পুলিশ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাস্কর্য 'রাজারবাগ-৭১' উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কল্যাণ প্যারেডে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে কল্যাণ প্যারেডে অংশ নিলেন।
গত বছরের মতো এবারও পুলিশ সপ্তাহ-২০১৭-এর প্যারেডে অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন এক নারী। তিনি চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার। এছাড়া প্যারেড অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী গাড়িও চালিয়েছেন পুলিশের একজন নারী সদস্য। তিনি সার্জেন্ট পান্না।
পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন শেখ হাসিনা। তৃতীয় দিন বুধবার বঙ্গভবনে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এছাড়া রাজারবাগে আইজি ব্যাচ প্রদান করবেন পুলিশ মহাপরিদর্শক। অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাদের পুনর্মিলনীর আয়োজনও রয়েছে। চতুর্থ দিন বৃহস্পতিবার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পুলিশ মহাপরিদর্শকের সম্মেলন রয়েছে। এছাড়া সিআইডি ও এসবির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হবে। সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবার পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভা ও আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy