অভিযুক্ত ক্রিকেটার আরাফাত সানি।
বিয়ের কথা স্বীকার না করলেও, নাসরিন সুলতানা নামের এক তরুণীর সঙ্গে ছ’মাসের ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করে জেল হেফাজতে গেলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটার আরাফাত সানি। তবে ঐ তরুণীকে বিয়ে করে ছয় মাস সংসার করার বিষয়টি সানি অস্বীকার করেছেন।
আটকের পর এক দিনের রিমান্ডে সানি পুলিশকে জানিয়েছেন, বিয়ের বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। সব ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন তিনি। “তার সঙ্গে আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই সুযোগ নিয়ে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন নাসরিন”- পুলিশের কাছে এমনই বলেছেন সানি।
তথ্যপ্রযুক্তি আইনে নাসরিন সুলতানা নামে ওই তরুণীর দায়ের করা মামলায় এক দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার সানিকে হাজির করা হয় আদালতে। আদালতে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, “নাসরিনের অভিযোগ সত্য না। ষড়যন্ত্র। আমি এই অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই। এই কষ্ট সহ্য করতে পারছি না।”
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, আটকের পর ২৩ জানুয়ারি ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় আরাফাত সানিকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় করা অভিযোগের ভিত্তিতে সানিকে গ্রেফতার করা হয়। সানি পুলিশকে বলেছেন, “নাসরিন ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল। তাই নিজেদের ছবি আদান-প্রদান হয়েছে। সেখানে কোথাও কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। নাসরিনকে তো অন্যরা চিনে না। এ ঘটনায় ক্ষতি যা হবে আমার। নাসরিন আমাকে ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছে।”
অভিযুক্ত ক্রিকেটার আরাফাত সানি। ছবি: সংগৃহীত
পুলিশ সুত্র বলছে, সানির কথা মতো তাঁর ভক্ত পরিচয় দিয়ে প্রথম কথা বলেছিলেন নাসরিনই। তার পর মাঝেমধ্যেই নাসরিন তাঁকে ফোন করে কথা বলতে চাইতেন। অনুশীলনের সময় ধানমন্ডির আবাহনী মাঠে বসে থাকতেন। সেই থেকে বন্ধুত্ব। দেখা হতো মাঝে-মধ্যে। এভাবেই নাকি ঘনিষ্ঠতা। কিন্তু বিয়ে করার কোনও প্রশ্নই উঠেনি বলে দাবি করেছেন সানি।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তা (ওসি) জামাল উদ্দিন মির বলেন, “নাসরিনের সঙ্গে সানির সম্পর্ক ছিল। কিছু তথ্য দিয়েছেন। তবে নাসরিনের সঙ্গে বিয়ে ও শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সানি। সানি ও নাসরিনের বক্তব্য যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। নাসরিনের অভিযোগের পুরোপুরি সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিছু ছবি আমাদের হাতে রয়েছে। এ সব ছবি ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।”
গত ৫ জানুয়ারি তথ্যপ্রযুক্তি আইনে সানিকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন নাসরিন সুলতানা। এর পর ২২ জানুয়ারি সানিকে সাভারের আমিন বাজারে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। নাসরিন অভিযোগ করেন, সানির সঙ্গে সাত বছরের পরিচয়ে প্রেম ও তারপর ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর বিয়ে হয় তাঁর। বিয়ের কাবিননামায় ধার্য করা হয় ৫ লাখ টাকা। কিন্তু বর্তমানে নানা অজুহাতে তাঁকে সামাজিক স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি জানিয়ে আসছেন সানি। কিছু দিন আগে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি ফেসবুকে পাঠিয়ে সানি নাকি হুমকিও দেন নাসরিনকে।
অভিযোগকারী নাসরিন সুলতানা। ছবি: সংগৃহীত
এই মামলা নিয়ে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে সানির বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেবে বোর্ড। একটা ব্যাপারে আমি নিশ্চয়তা দিচ্ছি, এ ধরনের কাজ বিসিবি কখনও বরদাস্ত করে না। কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে দোষী সাব্যস্ত হয়, তা হলে অবশ্যই সে নিষিদ্ধ হবে। তবে এর আগে বিষয়টির সত্যতা প্রমাণ হতে হবে। একটা খবর দেখেই তো আর আমরা কাউকে নিষিদ্ধ করতে পারি না। আগে বিষয়টি আদালতে সুরাহা হতে হবে।”
বিভিন্ন বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়ে এর আগেও গ্রেফতার হতে হয়েছে বাংলাদেশের একাধিক ক্রিকেটারকে। এর আগে ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হন জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন। একই বছরের অক্টোবরে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের মামলায় কারাগারে যান শাহাদাত হোসেন রাজীব।
আরও পড়ুন- ২৫তম স্ত্রীর অভিযোগে ২৭তম স্ত্রীর বাড়ি থেকে ধৃত ২৮ বিবির মিঞা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy