Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Bangladesh News

মেঘালয়ের বাংলাদেশ সীমান্তে গোপন সুড়ঙ্গের হদিশ

মেঘালয়ের গুজংপাড়ার গভীর অরণ্যে সুড়ঙ্গ। তুরা সেক্টরে টহল দিতে গিয়ে পাহাড়ের ঢালে চোখে পড়ে বিএসএফের। এমন জায়গায় মানুষ বিরল। আরণ্যক প্রাণীর আক্রমণের ভয়। সেখানে সুড়ঙ্গ কাটল কারা, উদ্দেশ্যটা কী।

অমিত বসু
শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৭ ১২:১৭
Share: Save:

মেঘালয়ের গুজংপাড়ার গভীর অরণ্যে সুড়ঙ্গ। তুরা সেক্টরে টহল দিতে গিয়ে পাহাড়ের ঢালে চোখে পড়ে বিএসএফের। এমন জায়গায় মানুষ বিরল। আরণ্যক প্রাণীর আক্রমণের ভয়। সেখানে সুড়ঙ্গ কাটল কারা, উদ্দেশ্যটা কী। পাতাল পথ এগিয়েছে বাংলাদেশ সীমান্তের দিকে। ৬০ ফুট কাটা হয়েছে। আরও ৫০ ফুট কাটলে কাঁটা তারের বেড়ার নীচ দিয়ে নিশ্চিন্তে বাংলাদেশে। পথ সম্পূর্ণ হয়নি। যাতায়াত শুরু করা যায়নি। বেশি দিনের পুরোন কাজ নয়। মাটি আলগা, নরম। একটু চাপ পড়লেই ধসে যাবে।

প্রথমটায় মনে হয়েছিল, বাংলাদেশে গরু পাচার করতেই এই সুড়ঙ্গ। ওই সীমান্তে অবৈধ গরু চালান আপাতত বন্ধ। অথচ চাহিদা প্রচুর। গরু পাঠালে টাকার পাহাড়। খতিয়ে দেখতেই ধারণাটা ভুল প্রমাণিত। সুড়ঙ্গটা মাত্র তিন ফুট চওড়া। এত সরু গর্তে গরু ঢুকবে কী করে। গরু কেন মানুষের যাতায়াতও সহজ নয়। পাতাল পথ যখন কাটাই হল এত সঙ্কীর্ণ কেন। প্রশস্ত হলে গোপন রাখা কঠিন হত তাই। বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠি দু'দেশের মধ্যে যাতায়াত চালু রাখতেই এটা করতে চেয়েছিল।

আরও পড়ুন, কলকাতা খানিক সামলেছে, ঢাকার কাঁচা বাজার কিন্তু এখনও আগুন

সীমান্ত পাহারা এখন খুবই কঠোর। মশা মাছি গলতে পারে না। ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী, বাংলাদেশের দিকে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের সমন্বয়ে অনেকটাই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। জঙ্গিরা বেশ অসহায়। যেভাবেই হোক তারা দ্বিপাক্ষিক সংযোগ রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল। এই সুড়ঙ্গ দিয়ে একমাত্র হামাগুড়ি দিয়েই এগোন সম্ভব। জংলি জানোয়ারের থেকে বাঁচাটাও কম কথা নয়। সাধারণ মানুষ না পারলেও বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জঙ্গিরাই পারতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, অসম, মিজোরাম সীমান্তে জঙ্গিরা নড়াচড়া করতে পারছে না। সীমান্ত ডিঙ্গোতে গেলেই ধরা পড়ছে। তুলনায় মেঘালয় শান্ত বলে সেখানেই পথ কাটতে চাইছে। শান্তির এলাকায় অশান্তির আগুন জ্বালাতে দেবে না মেঘালয়। রাজ্যের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা, রাজ্যপাল সম্মুগনাথনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। দরকারে মুকুল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলতেও রাজি। তাঁর মন্তব্য, মেঘালয় মানে হচ্ছে মেঘের আলয় বা বাড়ি। মেঘে কখনও ময়লা জমতে পারে না।

আরও পড়ুন, শুরু করা কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে, বাজেট বৃদ্ধি বাংলাদেশের

১৯৭২-এর ২১ জানুয়ারি তত্কালীন অসম ভোঙে পাঁচটি জেলা নিয়ে গঠিত মেঘালয়। খাসি, জয়ন্তিয়া, গারো পাহাড়ের বুকে পাহাড়ি রাজ্য। রাজ্যে নদীও অনেক। মঙ্গা, দামরিং, জাঞ্জিরাম, রিংগি, গানোল, বুগি, সিমসাং গারোর পাহাড়ি অঞ্চলে প্রবাহিত। খাসি আর জয়ন্তিয়া পার্বত্য অঞ্চলেও নদী কম নয়। নদীগুলো বর্ষায় খরস্রোতা হয়ে ওঠে। তখন সামলানো কঠিন হয়ে পড়লেও বন্যার কবলে পড়তে হয় না।

শিল্প সংস্কৃতির রাজ্য মেঘালয়কে সন্ত্রাস থেকে দূরে রাখতে সীমান্তে আরও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাদেশের শেরপুর জেলার কর্ণঝোরায় বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশের চৌকি আছে। সেখানে ২৭ নম্বর বিজেবি ব্যাটালিয়নকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা তদন্ত শুরু করেছে। মেঘালয় বিপন্মুক্ত রাখতে গোয়েন্দারাও তৎপর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE