India-Maldives Relationship

‘কোনও দেশকে হস্তক্ষেপ করতে দেব না’! মলদ্বীপে পার্লামেন্টের ভাষণে ভারতই কি মুইজ্জুর নিশানায়?

সোমবার মুইজ্জু জানান, তিনি কোনও দেশকে মলদ্বীপের সার্বভৌম ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে দেবেন না। কোনও দেশের নাম না করলেও, মনে করা হচ্ছে, ভারতের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছেন তিনি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১২:২৫
Will not allow any country, Maldives President Muizzu said in Parliament speech

মহম্মদ মুইজ্জু (বাঁ দিকে) এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

মলদ্বীপের পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর ভাষণ বয়কট করেছিল প্রধান বিরোধী দল। সোমবার বেলায় মাত্র ২৪ জন সাংসদের উপস্থিতিতে বক্তব্য রাখেন তিনি। পার্লামেন্ট-ভাষণেও ‘ভারত-বিরোধিতা’র সুর বজায় রেখেছিলেন মুইজ্জু। তিনি বলেন, “কোনও দেশকে আমাদের সার্বভৌম ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করতে দেব না।” কোনও দেশের নাম না করলেও, চলতি বিতর্কের আবহে মনে করা হচ্ছে, ভারতের উদ্দেশেই এই বার্তা দিয়েছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। এ ছাড়াও সোমবারের বক্তৃতায় মুইজ্জু আরও এক বার জানিয়ে দিয়েছেন, কত তারিখের মধ্যে ভারতীয় সেনা মলদ্বীপ ছাড়বে।

Advertisement

মলদ্বীপের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুইজ্জু পার্লামেন্টে জানান, আগামী ১০ মে-র মধ্যে সেনা সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে নয়াদিল্লির সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর সরকারের। মলদ্বীপে হেলিকপ্টার চলাচলের জন্য ভারতীয় সেনার তিনটি ঘাঁটি রয়েছে। এ দিন মুইজ্জু জানান, আগামী ১০ মার্চের মধ্যে প্রথম ঘাঁটিটি থেকে সরে যাবে ভারতীয় সেনা। বাকি দু’টি ঘাঁটি থেকে সেনা সরবে ১০ মে-র মধ্যে। এর আগে ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপরাষ্ট্রটির বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও জানানো হয়েছিল, ১০ মে-র মধ্যে সব সেনা সরানোর বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে ভারত। তখন অবশ্য ভারতের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, ‘উভয় পক্ষই মলদ্বীপের জনগণকে মানবিক এবং চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারতীয় সেনা কার্যকলাপ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে পারস্পরিক ভাবে কয়েকটি কার্যকর সমাধান খুঁজে বার করেছে।’’ যদিও বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরানোর কোনও উল্লেখ ছিল না।

প্রসঙ্গত, মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুর নেতৃত্বাধীন মলদ্বীপ সরকার সে দেশ থেকে সেনা প্রত্যাহারের জন্য ইতিমধ্যেই সময়সীমা বেধে দিয়েছিল ভারতকে। মুইজ্জু সরকারের ‘আর্জি’ ছিল, ১৫ মার্চের মধ্যে মলদ্বীপ থেকে সেনা সরাতে হবে ভারতকে। গত নভেম্বরে মলদ্বীপে ক্ষমতায় আসার পরে পরেই ভারতকে সেনা সরানোর আর্জি জানিয়েছিল ‘চিনপন্থী’ হিসাবে পরিচিত মুইজ্জু। আর তা নিয়ে দু’দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে চিড় ধরেছে বলেই মত কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। ২০১০ সাল থেকে একটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অংশ হিসাবে ভারতীয় সেনার ৮০ জন সদস্য মলদ্বীপে রয়েছে। মলদ্বীপের সেনাকে যুদ্ধ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও দেয় তারা। পাশাপাশি মলদ্বীপের অন্তর্গত প্রত্যন্ত দ্বীপের বাসিন্দাদের জন্য মানবিক সহায়তা এবং চিকিৎসার সামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বও রয়েছে ভারতীয় সেনার কাঁধে।

অন্য দিকে, সোমবার প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ভাষণ ‘বয়কট’ করে সে দেশের প্রধান দু’টি দল মলদ্বীভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এমডিপি) এবং দি ডেমোক্র্যাটস পার্টি। এই দু’টি দলই মুইজ্জুর ‘উগ্র ভারত বিরোধী নীতি’র কড়া সমালোচনা করেছিল। তাই এই বয়কটের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে ভারত-মলদ্বীপ সম্পর্ক ছায়া ফেলেছে কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

আরও পড়ুন
Advertisement