আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। — ফাইল চিত্র।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় জমানা শুরু হতেই নজর অভিবাসীদের উপর। চুরি-ছিনতাইয়ে অভিযুক্ত অবৈধ অভিবাসীদের ধরপাকড় করতে নতুন আইন আনার পথে এগোচ্ছে আমেরিকা। ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আমেরিকার সেনেটে এ সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে আমেরিকার অভিবাসন সংক্রান্ত সংস্থা ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টম্স এনফোর্সমেন্ট’।
গত বছরে জর্জিয়ার বছর বাইশের এক নার্সিং পড়ুয়া লেকেন রাইলিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছিল ভেনেজ়ুয়েলার এক নাগরিকের বিরুদ্ধে। ওই নার্সিং পড়ুয়ার নামেই আইন চালু করতে চাইছে আমেরিকার প্রশাসন। সেনেটে ৬৪-৩৫ ভোটে পাশ হয়েছে বিলটি। সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’ জানিয়েছে, ১২ জন ডেমোক্র্যাটও সেনেটে বিলটিকে সমর্থন জানিয়েছেন। এ বার বিলটি যাবে আমেরিকার কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভ্সে। সেখানেও বিলটি সহজেই পাশ হয়ে যাওয়ার কথা। দুই কক্ষে বিলটি পাশ হওয়ার পর ট্রাম্পের সই মিললেই তা আইনে পরিণত হয়ে যাবে।
এই বিল অনুসারে, চুরি, ছিনতাই, লুটপাট বা দোকান থেকে জিনিসপত্র হাতানোর মতো ঘটনায় অভিযুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে ‘ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টম্স এনফোর্সমেন্ট’। অভিবাসন আইন প্রয়োগে কোনও প্রদেশের প্রশাসন ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করলে সেই প্রদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলেরা সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।
আমেরিকার অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আনার বিষয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই ইঙ্গিত দিয়ে যাচ্ছেন ট্রাম্প। গত বছরের নির্বাচনী প্রচারেও এ বিষয়ে জোর দিয়েছেন তিনি। শপথ গ্রহণের আগে বিজয় ভাষণেও ট্রাম্প বলেছেন, “আমরা চাই না অপরাধীরা আমাদের দেশে আসুক।” সপ্তাহখানেকের মধ্যেই এ বিষয়ে একটি বিলে সই করতে চলেছেন বলেও ওই বক্তৃতায় আভাস দিয়েছেন তিনি। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, লক্ষ লক্ষ অভিবাসীকে আমেরিকা থেকে বিতাড়িত (ডিপোর্ট) করার পরিকল্পনা রয়েছে ট্রাম্পের। সে ক্ষেত্রে এই বিলটি আইনে পরিণত হলে ট্রাম্পের পরিকল্পনা এক ধাপ এগোবে বলে মনে করছেন অনেকে।
‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, অভিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলি ইতিমধ্যে এই বিল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে। তাদের উদ্বেগ, বিলটি কার্যকর করা হলে মানুষের অধিকার লঙ্ঘিত হতে পারে। অভিবাসন আইন প্রয়োগের জন্য প্রশাসনের উপর চাপ তৈরি করা হতে পারে এই আইনের মাধ্যমে।