গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
কিছু বিষয়ে মতভেদ থাকলেও সামগ্রিক ভাবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল বলে দাবি করল চিন। নয়াদিল্লিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে শুরুর আগে বুধবার চিনা বিদেশ দফতরের তরফে এ কথা জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভাপতিত্বে আয়োজিত জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের অনুপস্থিতি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে সে দেশের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র মাও নিং বলেন, ‘‘সামগ্রিক ভাবে ভারত-চিন সম্পর্ক স্থিতিশীল। বিভিন্ন স্তরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ও যোগাযোগ চলছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং জি২০ বৈঠকে যোগ দেবেন।’’
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুলিভান জি২০ বৈঠকে জিনপিংয়ের অনুপস্থিতির প্রসঙ্গ তুলেছিলেন। ভারত এবং চিনের সীমান্ত সংঘাত জি২০ সম্মেলনে প্রভাব ফেলবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “বিষয়টি চিনের উপর নির্ভর করছে। যদি চিন (সম্মেলনে) আসতে চায় এবং পণ্ড করার ভূমিকা নিতে চায়, সেই বিকল্পও তাদের হাতেই রয়েছে।”
লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার ২০২০-র জুনের রক্তাক্ত স্মৃতি এখনও ফিকে হয়নি। প্যাংগং হ্রদের উত্তর প্রান্ত, দেপসাং উপত্যকা-সহ কয়েকটি এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) পেরিয়ে আসা চিনা ফৌজ ভারতীয় ভূখণ্ডে ঘাঁটি গেড়ে বসে আছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে দফায় দফায় চলছে দুই দেশের সেনার কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠক। কিন্তু তাতে ফল মেলেনি। এই আবহে সম্প্রতি কমিউনিস্ট পার্টি শাসিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবাল টাইমস’ ২০২৩ সালের যে নতুন মানচিত্র (স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ) প্রকাশ করেছে তাতে অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখ লাগোয়া আকসাই চিনকে ‘চিনা ভূখণ্ড’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। যা নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ঘটনাচক্রে গত মার্চে নয়াদিল্লিতে জি-২০ রাষ্ট্রগোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীদের সম্মেলনের সময় পার্শ্ববৈঠকে বসেছিলেন জয়শঙ্কর এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী কিন গ্যাং। সেখানে ভারতের বিদেশমন্ত্রী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন, দু’দেশের সম্পর্ক এখনও স্বাভাবিক নয়। সীমান্তে শান্তি না ফিরলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্বাভাবিক হবে না বলেও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছিলেন তিনি। এই আবহে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে জিনপিংয়ের অনুপস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। কী কারণে জিনপিং ভারতে আসছেন না, তা স্পষ্ট করা হয়নি চিনা বিদেশ মন্ত্রকের তরফে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সংঘাতের আবহে নিজে নয়াদিল্লি না এসে অনুগত কিয়াংকে পাঠাচ্ছেন জিনপিং।