সুদানে গত ৫ দিনের গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ২০০ পেরিয়ে গিয়েছে। ছবি: রয়টার্স।
গৃহযুদ্ধ দীর্ণ সুদানে আটকে পড়েছেন কর্নাটক থেকে যাওয়া ৩১ জন জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ। বিধানসভা ভোটের আগে বিষয়টি নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে কন্নড় রাজনীতিতে। বিরোধী কংগ্রেসের অভিযোগ, উত্তর-পূর্ব আফ্রিকার দেশটিতে আটকে পড়া ভারতীয় জনজাতিভুক্ত লোকজনকে উদ্ধারে সক্রিয়তা দেখাচ্ছে না নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সুদানে গত ৫ দিনের গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা ২০০ পেরিয়ে গিয়েছে। সোমবার রাজধানী খার্তুমে সুদানের সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স’ (আরএসএফ)-এর লড়াইয়ে অন্তত ৯৭ জন অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছিল। নিহত হয়েছেন যুযুধান দুই সশস্ত্র বাহিনীর বেশ কিছু যোদ্ধাও। মঙ্গলবারও দিনভর দফায় দফায় দুই বাহিনীর সংঘর্ষ ঘটেছে সেখানে।
কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, কয়েকশো ভারতীয় সুদানে আটকে রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কর্নাটকের যাযাবর ‘হক্কি-পিক্কি’ আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওই ৩১ জন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে তাঁরা খাদ্যসঙ্কটে পড়েছেন। কর্নাটকের রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান মনোজ রাজন বলেন, ‘‘ঘটনা সম্পর্কে আমরা ওয়াকিবহাল। বিদেশ মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। ওই ৩১ জনকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার থেকে রাজধানী খার্তুম-সহ সুদানের বেশ কিছু এলাকায় সেনাপ্রধান আবদেল ফতাহ আল-বুরহান এবং আধাসেনা প্রধান মহম্মদ হামদান ডাগলোর বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াইয় চলছে। ঘটনাচক্রে, সেনাশাসিত ওই দেশের সামরিক কাউন্সিলের প্রধান জেনারেল বুরহান। সহকারী প্রধান ডাগলো ওরফে জেনারেল হেমেত্তি। সূত্রের খবর, সোমবার আরএসএফের হাত থেকে রাজধানী শহরের একাংশের দখল নিয়েছে সেনা।
২০১৯ সালের এপ্রিলে সুদানে সেনা অভ্যুত্থানে গদিচ্যুত হয়েছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির। সেনা এবং গণতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি হয়েছিল অন্তর্বর্তিকালীন সরকার। কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লা হামদকের নেতৃত্বাধীন সেই অন্তর্বর্তিকালীন সরকারকেও উৎখাত করে সেনা। এ বার অন্তর্দ্বন্দ্ব শাস সামরিক কাউন্সিলের অন্দরেই। অতীতে গণহত্যা-সহ একাধিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে আরএসএফের বিরুদ্ধে। ডাগালোর অভিযোগ, বশিরের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রয়েছে বুরহানের।
সেনার তরফে সোমবার আরএসএফ-কে ভেঙে দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এই গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে সুদানে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়াদিল্লি। খারতুমের ভারতীয় দূতাবাসের তরফে বসবাসকারী ভারতীয়দের বাড়ির বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে। রবিবার যুদ্ধের মধ্যে পড়ে নিহত হন কেরলের বাসিন্দা অ্যালবার্ট অগাস্টাইন। তিনি চাকরিসূত্রে সুদানে ছিলেন।