মিখাইল গর্বাচভ। ছবি: রয়টার্স।
প্রয়াত হলেন সাবেক সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচভ। বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম এবং শেষ প্রেসিডেন্ট গর্বাচভের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে মস্কো। বয়সজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি। কিডনির সমস্যাও ছিল। বুধবার সেন্ট্রাল ক্লিনিক্যাল হাসপাতালে মৃত্যু হয় শান্তিতে নোবেলজয়ীর। তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, শোকবার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
১৯৮৪ সালে ৫৩ বছর বয়সে কমিউনিস্ট পার্টির জেনারেল সেক্রেটারি হন গর্বাচভ। আবার এই সোভিয়েত নেতার সময়েই মধ্য ও পূর্ব ইউরোপ জুড়ে কমিউনিজমের পতন ঘটেছিল। লক্ষ লক্ষ সোভিয়েত নাগরিকের কাছে তিনি স্বাধীনতা প্রদানকারী ত্রাণকর্তা হিসাবে পরিচিত ছিলেন। আবার দেশের পরবর্তী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য তাঁর সমালোচনা করেছেন বহু নেতা। সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে গর্বাচভ আখ্যায়িত হন ইতিহাসের এক ‘কলঙ্কিত নায়ক’ হিসাবে।
গর্বচেভ সোভিয়েত ইউনিয়নের আধুনিকীকরণ এবং উন্নতিতে কাজ করে গিয়েছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনি নিয়ন্ত্রণ হারান। পতন হয় সোভিয়েত ইউনিয়নের। অর্থাৎ, তিনিই সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রথম এবং শেষ প্রেসিডেন্ট।
বার্লিন প্রাচীরের পতন রোধে শক্তি প্রয়োগ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গর্ভাচভ। তাঁর সিদ্ধান্ত ছিল এতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ এড়ানো যেতে পারে। ঠান্ডা যুদ্ধের দুনিয়ায় বার্লিন প্রাচীর তখন একটা প্রতীক। পশ্চিমে গণতন্ত্র, শান্তি। পূর্বে দারিদ্র ও একনায়কত্ব। পাঁচিল তৈরির পরই পশ্চিম বার্লিনে দাঁড়িয়ে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট কেনেডি বলেছিলেন, “আমি নিজেকে বার্লিনের নাগরিক মনে করি। এই দুনিয়ায় মুক্ত মানুষ মানেই বার্লিনের লোক।” পাঁচিল ভেঙে যাওয়ার দু’বছর আগে ব্রান্ডেনবুর্গ গেটে রোনাল্ড রেগনের বিখ্যাত বক্তৃতা ছিল, ‘‘মিস্টার গর্বাচভ, এই গেট খুলে দিন। ভেঙে ফেলুন পাঁচিল।’’
রাষ্ট্রপুঞ্জর মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গর্বাচভের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এক জন শক্তিশালী নেতা। যিনি শান্তির জন্য অক্লান্ত ভাবে কাজ করে গিয়েছেন।’’