Bangladesh Unrest

গাজ়িয়াবাদের এয়ারবেসে অবতরণ, ভারতে পৌঁছলেন হাসিনা, পরবর্তী গন্তব্য লন্ডন না কি এখন ভারতেই

সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে ঢাকার বাসভবন তথা ‘গণভবন’ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তাঁকে কপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০২৪ ১৭:৫৬
শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র

দিল্লি লাগোয়া গাজ়িয়াবাদের হিন্ডন এয়ারবেস বা বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নামল শেখ হাসিনার বিমান। একটি সূত্র মারফত এই খবর পাওয়া গিয়েছে। আরও জানা গিয়েছে, হাসিনা ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। তাই তাঁর পরবর্তী গন্তব্য নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। তবে একটি অসমর্থিত সূত্রের খবর, হাসিনা সম্ভবত লন্ডনে যাবেন। ভারতে তিনি কোনও রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, সোমবার রাতেই তিনি লন্ডনের উড়়ান ধরতে পারেন। তার পরে জানা যায়, ব্রিটেন হাসিনার রাজনৈতিক আশ্রয়ের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। যদিও সরকারি সূত্রে এর কোনও সমর্থন মেলেনি। তবে তেমন হলে হাসিনা আগামী কয়েক দিন দিল্লিতেই ‘সেফ হাউসে’ থাকতে পারেন।

Advertisement

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দিল্লির উপকণ্ঠে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে হিন্ডন বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নামে হাসিনার বিমান। এই এয়ারবেসটি এশিয়ার মধ্যে বৃহত্তম। বায়ুসেনার ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ড এয়ারবেসটির দেখভাল করে থাকে। একটি সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ বায়ুসেনার একটি মালবাহী (কার্গো) বিমানে হাসিনা গাজিয়াবাদে নামেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং কয়েক জন অফিসার।

গণবিক্ষোভের জেরে শুধু প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়াই নয়, বাংলাদেশও ছাড়তে হয়েছে হাসিনাকে। সোমবার দুপুরে বোন রেহানাকে নিয়ে ঢাকার বাসভবন তথা ‘গণভবন’ ছাড়েন তিনি। তাঁকে কপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে। বাংলাদেশ বায়ুসেনার কপ্টারটি উড়িয়ে নিয়ে যান এয়ার কমান্ডার আব্বাস। তার পর জানা যায়, ভারতের আকাশসীমায় দেখা গিয়েছে হাসিনার বিমানকে। জল্পনা ছিল যে, দিল্লি বিমানবন্দরে অবতরণ করবে হাসিনার বিমান। কিন্তু পরে জানা যায়, দিল্লি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ না করে রাজধানী লাগোয়া গাজ়িয়াবাদের বায়ুসেনা ঘাঁটিতে অবতরণ করেছে হাসিনা।

বাংলাদেশে সেনার অধীনে অন্তর্বর্তী তদারকি সরকার গঠিত হচ্ছে বলে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। একটি সূত্রের দাবি, তার আগে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর তরফে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে সময় বেঁধে দেওয়া হয় ইস্তফা দেওয়ার জন্য। ৪৫ মিনিট সময় তাঁকে দেওয়া হয়েছিল বলে একটি সূত্রের দাবি। তবে অন্য একাধিক সূত্রের দাবি, পুরো বিষয়টিই হয়েছে সেনাবাহিনী এবং দিল্লির সঙ্গে আলোচনার সাপেক্ষে। তার পরেই হাসিনা ইস্তফা দেন।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও ন’দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। ধৃত আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের। কিন্তু বিগত কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ ‘হামলা’য় একের পর এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন— হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় তারা।

‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুসারে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘অসহযোগ কর্মসূচি’ ঘিরে যে অশান্তির সূত্রপাত হয়, তাতে কেবল রবিবারেই অন্তত ৯৮ জনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ১৪ জন পুলিশকর্মীও। হামলা, পাল্টা হামলায় জখম হন শতাধিক মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শাসকদল আওয়ামী লীগের কর্মী এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হয় আন্দোলনকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement