সৌদি রাজা মহম্মদ বিন সলমন (বাঁ দিকে) এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। ছবি: রয়টার্স।
জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে ভারতের মতেরই প্রতিধ্বনি শোনা গেল সৌদি আরবের গলায়। গত রবিবার মক্কার আল-সাফা প্রাসাদে গিয়ে সৌদি রাজা মহম্মদ বিন সলমনের সঙ্গে বৈঠক করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। বৈঠকের পর সোমবার দুই দেশের তরফে যে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, সেখানে সৌদি আরবের তরফে বলা হয়েছে, কাশ্মীর ছাড়াও অন্য ‘অমীমাংসিত বিষয়গুলি’ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সমাধান করুক ভারত এবং পাকিস্তান।
সৌদি আরবের এই বক্তব্য নয়াদিল্লিকে স্বস্তিতে রাখলেও পাকিস্তানের অস্বস্তি বৃদ্ধি করবে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ভারত দীর্ঘ দিন ধরেই জানিয়ে আসছে যে, ‘কাশ্মীর সমস্যা’ তাদের এবং পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়। তাই এই বিষয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ কিংবা মধ্যস্থতার প্রস্তাব বার বার খারিজ করে দিয়েছে নয়াদিল্লি। ২০১৯ সালে কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পরেই এই বিষয়ে আলোচনা করতে ভারতকে রাজি করানোর জন্য আমেরিকাকে অনুরোধ জানায় পাকিস্তান।
যদিও বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর স্পষ্ট ভাষায় বলে দেন যে, “এই বিষয়ে কোনও আলোচনা করতে হলে ভারত সেটা পাকিস্তানের সঙ্গেই করবে। অন্য কোনও দেশের সঙ্গে নয়।” একই সঙ্গে নয়াদিল্লির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, জম্মু ও কাশ্মীর ‘ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে’। পাকিস্তান প্রসঙ্গে ভারতের মূল্যায়ন এই যে, নয়াদিল্লি ইসলামাবাদের সঙ্গে ‘প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক’ চায়। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ‘সন্ত্রাসবাদীদের মুক্তাঞ্চল’ করা থেকে বিরত থাকতে হবে পাকিস্তানকে।
সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুই পক্ষ অমীমাংসিত বিষয়, বিশেষত জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যা ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে।” প্রসঙ্গত, আরব দেশগুলির সঙ্গে ভারত এবং পাকিস্তান— দুই দেশের সম্পর্কই ভাল। নরেন্দ্র মোদী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ তুলে নেওয়ার সময় অনেক মুসলিমপ্রধান দেশ এর বিরোধিতা করলেও সৌদি আরব সরাসরি এর বিরোধিতা করেনি। বলেছে, এটা ‘নয়াদিল্লির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’।