৪ দিনের ভারত সফরে রবিবার নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন এমিন। ফাইল চিত্র।
ইউক্রেনের উদাহরণ দেখে ভারতকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিলেন ভলোদিমির জ়েলেনস্কি সরকারের বিদেশ উপমন্ত্রী এমিন জ়াপারোভা। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স’ (আইসিডব্লিউএ)-র আলোচনাসভায় তিনি বলেন, ‘‘কঠিন প্রতিবেশীদের কী ভাবে সামলানো যায়, তা ক্রাইমিয়া পরিস্থিতি দেখে শিখতে পারে ভারত।
৪ দিনের ভারত সফরে রবিবার নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন এমিন। গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ সেনার হামলা শুরুর পরে এই প্রথম ইউক্রেনের কোনও মন্ত্রী ভারত সফরে এলেন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এখনও রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলির আনা কোনও প্রস্তাব সমর্থন করেনি নয়াদিল্লি। এমিনের মতে এই ‘দায় এড়ানোর’ কৌশল যে পরিস্থিতি বিশেষে কাজে আসে না। তিনি বলেন, ‘‘চিন এবং পাকিস্তানের মতো কঠিন প্রতিবেশীদের ঠিক ভাবে সামলাতে না পারলে, সমস্যা আরও বড় হয়ে উঠতে পারে।’’
লাদাখে ভারতীয় ও চিনা সঙ্ঘাত এবং পাক সীমান্তের পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করেই এমিনের এই মন্তব্য বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। মস্কো-নয়াদিল্লির পুরনো সখ্যের কথা মাথায় রেখেও ইউক্রেন যে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চায়, সে কথাও জানিয়েছেন জ়েলেনস্কির মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘একটি বার্তা নিয়ে আমি ভারতে এসেছি। ইউক্রেন সত্যিই চায় ভারত এবং ইউক্রেন ঘনিষ্ঠ হোক। হ্যাঁ, আমাদের একটি ইতিহাস রয়েছে। কিন্তু আমরা ভারতের সঙ্গে নতুন ভাবে সম্পর্ক শুরু করতে চাই।’’
২০১৪ সালে রাশিয়ার সেনা হামলা চালিয়ে ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের বড় অংশ ছিনিয়ে নিলেও এখন ধারাবাহিক ভাবে প্রবলতর প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়ে চলেছে ইউক্রেন। সেই প্রসঙ্গই এসেছে এমিনের কথায়। প্রসঙ্গত, যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কির সঙ্গে একাধিক বার ফোনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর কথা হয়েছে। যুদ্ধ থামানোর জন্য ভারতের সহায়তাও চেয়েছেন জ়েলেনস্কি। পাশাপাশি, শাংহাইয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে প্রকাশ্যে যুদ্ধ থামানোর কথা বলেছেন মোদী।
প্রায় তিন দশক আগে সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র ভেঙে নতুন রাষ্ট্র হিসাবে ইউক্রেনের আত্মপ্রকাশের পর থেকেই কিভের সঙ্গে নয়াদিল্লির সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা-সহ একাধিক ক্ষেত্রে রুশ নির্ভরতার কথা মাথায় রেখে যুদ্ধ নিয়ে ভারসাম্যের কূটনীতিতেই সাউথ ব্লক হাঁটবে বলে সরকারের একটি সূত্রের দাবি। প্রসঙ্গত, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনে সেনা অভিযানের নির্দেশ দেওয়ার এক মাস পরেই ভারত সফরে এসেছিলেন সে দেশের বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। সে সময় পশ্চিমি দুনিয়ার হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে রাশিয়া থেকে তেল কেনার কথা ঘোষণা করেছিল মোদী সরকার।