একের পর এক গণকবর মিলছে ইউক্রেনে। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া।
ইউক্রেনের রাজধানী কিভের অদূরে বুচা শহরের পরে এ বার দক্ষিণের বন্দরনগরী মারিয়ুপোলে বন্ধ রুশ সেনার নির্মম হত্যালীলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রী ইরিনা ভারেস্চুক বলেন, ‘‘সোমবার মারিয়ুপোলে অন্তত ১,৫৫০ জন অসামরিক নাগরিককে খুন করেছে রাশিয়ার সেনা।’’
মঙ্গলবার কিভের উপকণ্ঠে মটিজিনে একটি কবর থেকে হাত-বাঁধা পাঁচটি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তার মধ্যে স্থানীয় মেয়রের দেহও রয়েছে বলে ইউক্রেন সরকারের দাবি। অভিযোগ, ইউক্রেন ফৌজের প্রত্যাঘাতে পিছু হটার সময় বুচা শহরের মতোই মটিজিনেও নরমেধযজ্ঞ চালিয়েছে ভ্লাদিমির পুতিনের বাহিনী।
রবিবার বুচা শহরে রুশ সেনার অত্যাচারের ভয়াবহতা প্রকাশ্যে এসেছিল। ইউক্রেন সেনার প্রত্যাঘাতে পিছু হটার সময় ওই শহরে রুশ বাহিনী গণহত্যা চালায় বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে ৪০০-রও বেশি সাধারণ নাগরিককে খুন করা হয়। মেলে একের পর এক গণকবর। মৃত মহিলাদের শরীরে পোড়া স্বস্তিক চিহ্নের দাগ এমনকি, ১০ বছরের বালিকার গোপনাঙ্গে আঘাত এবং অত্যাচারের চিহ্ণও স্পষ্ট। যা দেখে সমালোচনার ঝড় উঠেছে বিশ্বে। ইউক্রেনের পার্লামেন্টের এক সদস্য রুশ বাহিনীর এই অত্যাচারের নিন্দা করে জানিয়েছেন, রাশিয়ার সেনার লালসার হাত থেকে বাদ যায়নি শিশুরাও।
যদিও অত্যাচারের চিহ্ন দেখে অনেকেই বলছেন, রাশিয়ার নিয়মিত সেনা (রেগুলার আর্মি) নয়, বুচায় গণহত্যা চালিয়েছে প্রেসিডেন্ট পুতিনের পাঠানো চেচেন যোদ্ধারা। চেচেনিয়ার মিলিশিয়া নেতা রমজান কাদিরভের বাহিনীর নৃশংসতার দুর্নাম রয়েছে বহু দিনই। চেচেনিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় মস্কো সমর্থক কাদিরভ-বাহিনী বহু সাধারণ নাগরিককে একই কায়দায় হাত-বেঁধে খুন করেছিল।
রুশ সেনার হত্যালীলা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। গণহত্যা-কাণ্ডের প্রতিবাদে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করেছে জার্মানি, লিথুয়ানিয়ার মতো একাধিক দেশ। এরই মধ্যে মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভেলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, ইউক্রেনের বোরোডিয়াঙ্কা শহরে বুচার চেয়েও ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে পুতিনের ঘাতক বাহিনী।