মালালা ইউসুফজাই এবং তসলিমা নাসরিন। ফাইল চিত্র।
নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের এক পাকিস্তানি নাগরিককে বিয়ে করা তিনি কোনও ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না! টুইট করে সেই হতাশা প্রকাশও করে ফেললেন তসলিমা নাসরিন। ৯ নভেম্বর ব্রিটেনের বার্মিংহামে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের উদ্যোগপতি অসর মালিকের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন মালালা। সেই খবরটি তিনি নিজেই নেটমাধ্যমে জানান।
মালালার বিয়ের খবরে যখন সকলে উচ্ছ্বসিত, তার ঠিক বিপরীত মেরুতে হাঁটতে দেখা গেল তসলিমাকে। জানালেন, মালালার বিয়েতে মোটেই তিনি খুশি হননি। বরং মর্মাহতই হয়েছেন। কেন?
মামালা কাকে বিয়ে করলেন? এক জন পাকিস্তানিকে। এখানেই আপত্তি লেখিকার। টুইটে তিনি লেখেন, ‘এটা জেনে খুবই হতাশ হচ্ছি যে, মালালা এক জন পাকিস্তানিকে বিয়ে করেছেন। ওঁর বয়স মাত্র ২৪। মালালা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। আশা করেছিলাম এক জন সুদর্শন এবং প্রগতিশীল ইংরেজের প্রেমে পড়বেন তিনি। ৩০ বছরের আগে বিয়ের কথা ভাববেন না। কিন্তু…’।
Quite shocked to learn Malala married a Pakistani guy. She is only 24. I thought she went to Oxford university for study, she would fall in love with a handsome progressive English man at Oxford and then think of marrying not before the age of 30. But..
— taslima nasreen (@taslimanasreen) November 9, 2021
১৯৯৭ সালের ১২ জুলাই উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের সোয়াট জেলায় এক সুন্নি মুসলিম পরিবারে জন্ম মালালার। ২০১২ সালে স্কুলে যাওয়ার পথে জঙ্গি হামলার শিকার হন তিনি। পরে ওই হামলার দায় স্বীকার করে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান। হাজারো বাধা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও নারীশিক্ষা বিস্তারে তাঁর সক্রিয় ভূমিকার জন্য ২০১৪ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার পান মালালা। হামলার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য ইংল্যান্ডে নিয়ে আসা হয়। তখন থেকেই পাকাপাকি ভাবেই ইংল্যান্ডের বাসিন্দা মালালা। এবং সেখান থেকেই নারীশিক্ষা বিস্তারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
Who tried to kill her?
— taslima nasreen (@taslimanasreen) November 11, 2021
Paki
Why can't she live in her land?
Paki
Where she lives?
White land
Who treated her?
White
Who saved her life?
White
Who gave her asylum?
White
Who cowrote book?
White
Who helped creating fund?
White
Who gave her Nobel
White
She could marry a White
Yuck
পাকিস্তানের সুদূর পাখতুনখোয়ার রক্ষণশীল সমাজ থেকে উঠে আসা মেয়েটি ভাগ্যচক্রে ইংল্যান্ডের মতো ‘প্রগতিশীল’ সমাজে গিয়ে পড়েছিলেন। সেই মেয়ে সেই প্রগতিশীল সমাজের কাউকে নিজের জীবনসঙ্গী না বানিয়ে পাকিস্তানিকেই বিয়ে করলেন— এটা মানতে পারছেন না তসলিমা। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যারা ওঁকে হত্যার চেষ্টা করছিল, তারা কারা ছিল? পাকিস্তানি। কেন নিজের দেশ ছাড়তে হল? সেই পাকিস্তানের জন্যই। কিন্তু যারা তাঁকে আশ্রয় দিয়েছেন, ওঁর চিকিৎসা করেছেন, জীবন বাঁচিয়েছেন, তাঁরা তো সাদা চামড়ার মানুষ। যাঁর সঙ্গে উনি বই লিখেছেন, যাঁরা ওঁকে তহবিল সংগ্রহে সাহায্য করেছেন, নোবেল দিয়েছেন, তাঁরাও তো সেই একই শ্রেণির মানুষ। কিন্তু এর পরেও মালালা বিয়ে করলেন কাকে? সেই পাকিস্তানিকেই! বিষয়টি সত্যিই হতাশাজনক, বলেছেন তসলিমা।
তবে মালালার বিয়ে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় কটাক্ষের শিকার হয়েছেন বাংলাদেশের লেখিকা। বলা হয়েছে, মালালা কাকে নিজের জীবনসঙ্গী বাছবেন, তা ঠিক করার উনি কে? তসলিমার ওই টুইটকে ‘অত্যন্ত নীচ’ বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, সব পাকিস্তানি তো এক নয়!