Ishaq Dar

ঢাকা সফরে পাক বিদেশমন্ত্রী দার

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের আমন্ত্রণে তাঁর এই সফর। ইউনূসও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সুবিধামতো সময়ে ইসলামাবাদে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:৩৪
পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার।

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার। —ফাইল চিত্র।

বাংলাদেশের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফরে আসছেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দার। তিনি আবার শাহবাজ় শরিফ সরকারে উপপ্রধানমন্ত্রীও। শুক্রবার সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম এই খবর দিয়ে দারের সফরকে ‘উপমহাদেশের রাজনীতিতে মোড় ঘোরানোর ঘটনা’ আখ্যা দিয়েছে। অগস্টে ঢাকায় ‘ভারত-অনুগত সরকার উচ্ছেদের পরে’ বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কে জোয়ার এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে পাক সংবাদমাধ্যমে। বৃহস্পতিবারই সাংবাদিক বৈঠকে বাংলাদেশকে ‘ফিরে পাওয়া হারানো ভাই’ বলে অভিহিত করেছিলেন পাক বিদেশমন্ত্রী।

Advertisement

ক্ষমতায় আসার পরে মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যকে সরিয়ে রেখে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে উঠেপড়ে লেগেছে মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার। কায়রোয় ডি-৮ সংগঠনের শীর্ষবৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের সঙ্গে সম্প্রতি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস। সেখানে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শোধরানোর জন্য বাণিজ্যিক ও মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর নানা উপায় নিয়ে দুই নেতা কথা বলেন। একই সঙ্গে সার্ক সংগঠনকে উজ্জীবিত করতে পাকিস্তানের সহযোগিতা চান ইউনূস। সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদে পাকিস্তানের মদতের কারণে ভারত হাত গুটিয়ে নেওয়ায় দক্ষিণ এশীয় দেশগুলির সহযোগিতা সংগঠন সার্ক কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে বিমস্টেক সংগঠনকে সক্রিয় করে তুলেছে দিল্লি, পাকিস্তান যার সদস্য নয়। কিন্তু অস্থায়ী সরকারের দায়িত্ব পেলেও ইউনূস সার্ককে সক্রিয় করার পক্ষে সওয়াল করতে শুরু করেন। পাকিস্তানও সুযোগ পেয়ে ইউনূসের সুরে সুর মেলাচ্ছে। এই মুহূর্তে প্রতিবেশী দেশগুলিতে দিল্লির আর আগের মতো নিরঙ্কুশ প্রভাব নেই। অনেকেই এ জন্য নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিদেশনীতিকে দুষছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারতকে ‘ঘুমন্ত সদস্য’ করে রেখে বাকি দেশগুলিকে নিয়ে সার্ক বৈঠক আয়োজিত হলে দিল্লির মুখ আরও পুড়বে। যদিও সার্কের নিয়ম অনুযায়ী সব সদস্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের উপস্থিতি ছাড়া শীর্ষ বৈঠক করা যায় না। কিন্তু বাকিরা তৎপর হলে ভারতের উপরেও চাপ বাড়বে। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের দাবি, তাদের বিদেশমন্ত্রীর ঢাকা সফরে সার্ক সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হবে।

পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের আমন্ত্রণে তাঁর এই সফর। ইউনূসও প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সুবিধামতো সময়ে ইসলামাবাদে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর আগে শেষ বার ২০১২-য় ইসলামাবাদে ডি-৮ শীর্ষ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে ঢাকায় গিয়েছিলেন পাকিস্তানি বিদেশমন্ত্রী হিনা রব্বানি খার। ভারতের গোয়েন্দাদের অভিযোগ, সম্পর্ক ফিরতেই ঢাকায় নতুন করে সক্রিয় হয়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই। ইউনূস সরকার জঙ্গিদের সম্পর্কে নরম মনোভাব নেওয়ায় জেহাদি সংগঠনগুলিও ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। এর ফলে ভারতের নিরাপত্তা নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

Advertisement
আরও পড়ুন