(বাঁ দিকে) পুলিশের গুলিতে হত ঘাতক। আমেরিকার নিউ অরলিন্স শহরে ট্রাক নিয়ে হামলা। ছবি: সংগৃহীত।
নিউ অর্লিয়েন্সে হামলার পর অবশেষে মুখ খুললেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আজ এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘‘আইএস ও অন্য জঙ্গি সংগঠনগুলির পিছু ছাড়ব না আমরা। আমেরিকায় ওরা লুকনোর জায়গা পাবে না।’’ তিনি আরও বলেন, এফবিআই তাঁকে জানিয়েছে যে বর্ষবরণের রাতে একাই হামলার ছক কষেছিল নিউ অর্লিয়েন্সে হামলাকারী সামসুদ-দিন জব্বার (৪২)। এই ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত নয়। হামলার পরেই ডেমোক্র্যাটদের ঘাড়ে দায় ঠেলে, বর্তমান নেতৃত্বকে দুর্বল, অযোগ্য বলে তোপ দেগেছিলেন ভাবী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমান সরকারের সীমান্ত নীতির জন্যেই আমেরিকায় সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা বাড়ছে বলে আঙুল তুলেছিলেন তিনি। তবে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদকে যে তারা কোনও ভাবে রেয়াত করবেন না তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাইডেন।
নিউ অর্লিয়েন্সে হামলার বিষয়ে আজ বিশদ তথ্য প্রকাশ করেছে এফবিআই। সে দিনের হামলায় আততায়ী-সহ ১৫ জন নিহত হন। জখম হন ৩৫ জন। এফবিআই জানিয়েছে, কট্টরপন্থী আইএস ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিল জব্বার। বার্বান স্ট্রিটে হামলার আগের দিন নিকটবর্তী ফ্রেঞ্চ কোয়ার্টার এলাকায় দু’টি জায়গায় বরফের কুলারের মধ্যে বিস্ফোরক রেখে আসে জব্বার। রিমোটের মাধ্যমে সেই বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিল সে। সেগুলিকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। তদন্তকারীরা প্রথমে অনুমান করেছিলেন, এই হামলায় একাধিক ব্যক্তির যোগ থাকতে পারে। এখন তারা নিশ্চিত যে পুরো পরিকল্পনা একাই করেছিল জব্বার। ভাড়া করা ট্রাক নিয়ে বার্বান স্ট্রিটে হামলার আগে ফেসবুকে পাঁচটি ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশ করেছিল ওই ব্যক্তি। ভিডিয়োতে সে জানায়, মানুষ মারতে চায় সে। তার গাড়িতেও আইএসের কালো পতাকা পাওয়া গিয়েছে।
টেক্সাসের বাসিন্দা জব্বার আমেরিকান সেনার প্রাক্তন কর্মী। এক সময় আফগানিস্তানে সেনার তথ্য প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের হয়ে কাজ করেছে। কয়েক বছর আগে কট্টরপন্থী মৌলবাদে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে সে। এ কারণে স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদও ঘটে। সম্প্রতি একটি রিয়েল এস্টেট সংস্থায় কাজ করছিল। নিজে স্বাধীন ভাবে ব্যবসারও চেষ্টা চালাচ্ছিল। ২০২৩-এ কয়েক দিনের জন্য মিশরে যায় জব্বার। সেখান থেকে টরন্টো হয়ে আমেরিকায় ফিরেছিল। কী কারণে ওই সফর, তা খুঁজে দেখছে এফবিআই। তবে দাদা যে হামলা চালিয়ে মানুষ খুন করতে পারে তা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না জব্বারের ভাই। মাঝে বেশ কিছু দিন যোগাযোগ ছিল না পরিবারের সঙ্গে। সম্প্রতি ফের কথা শুরু হয়। তেমন কিছু অস্বাভাবিক কারও চোখে ধরা পড়েনি। পরিবার ও বন্ধু মহলে শান্তিপ্রিয় বলেই পরিচিত ছিল সামসুদ-দিন জব্বার।