Bangladesh Situation

নববর্ষে ইউনূসের ‘বাণী’: বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তুলুন, তবু পহেলা বৈশাখে ফের অশান্তি চট্টগ্রামে

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘বাণী’ প্রকাশ করেছেন মুহাম্মদ ইউনূস। তাতে পহেলা বৈশাখের ঐতিহ্যকে স্মরণ করেছেন তিনি। শান্তি, সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৪৬
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাঁর সেই ‘বাণী’।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এবং তাঁর সেই ‘বাণী’। — নিজস্ব চিত্র।

নতুন বাংলা বছরে বৈষম্যহীন, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার ডাক দিলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশে সোমবারই নতুন বছর শুরু। বছরের প্রথম দিনকে তারা ‘পহেলা বৈশাখ’ বলে থাকে। সেই পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে একটি ‘বাণী’ প্রকাশ করেছেন ইউনূস। সেখানেই ধর্মীয় সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছেন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পহেলা বৈশাখকে সমগ্র বাঙালি জাতির উৎসব বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তবে বাংলাদেশে অশান্তিও অব্যাহত। রবিবার রাতে চট্টগ্রামে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানমঞ্চে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি স্টার’ এই খবর জানিয়েছে।

Advertisement

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে ‘বাণী’তে ইউনূস লিখেছেন, ‘‘বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যে পহেলা বৈশাখ বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এটি বাঙালির সম্প্রীতির দিন, মহামিলনের দিন। নববর্ষের এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি জাতি জেগে ওঠে নবপ্রাণ স্পন্দনে, নব-অঙ্গীকারে। আসুন আমরা বিগত বছরের গ্লানি, দুঃখ-বেদনা, অসুন্দর ও অশুভকে ভুলে গিয়ে নতুন প্রত্যয়ে, নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে চলি।’’ ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের কথাও উল্লেখ করেছেন ইউনূস। লিখেছেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থান আমাদের সামনে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে। এই অভ্যুত্থান বৈষম্যহীন, সুখী-সমৃদ্ধ, শান্তিময় ও আনন্দপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রেরণা দেয়। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এই বাংলা নববর্ষে আমাদের অঙ্গীকার।’’

বাংলাদেশে নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত সব উদ্যোগের সাফল্য কামনা করেছেন ইউনূস। কিন্তু চট্টগ্রামের ডিসি হিল এলাকায় রবিবার রাতে নতুন করে অশান্তি ছড়ায়। সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ওই এলাকায় মঞ্চ সাজানো হয়েছিল। রাতে সেখানে ভাঙচুর করে একদল দুষ্কৃতী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ‘আওয়ামী লীগের দালালরা সাবধান’ বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় এবং সাত জনকে আটক করে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর বার বার অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। সেই তালিকায় শীর্ষে ছিল চট্টগ্রাম। নববর্ষের আগেও সেখান থেকে অশান্তির খবর পাওয়া গেল। যদিও এই ধরনের ঘটনাগুলিকে ‘বিচ্ছিন্ন’ বলে দাবি করে এসেছে ঢাকা।

নববর্ষে সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা শান্তির দেশ চাই, শৃঙ্খলার দেশ চাই। হানাহানি, বিদ্বেষ চাই না। বিভিন্ন মত থাকতে পারে। কিন্তু আমরা সবাই যেন সবাইকে শ্রদ্ধা করি। একে অপরের মতামতকে যেন শ্রদ্ধা করি। আমাদের নিজস্ব মতামত থাকবে, সেই অনুযায়ী আমরা অবশ্যই কাজ করব। কিন্তু আমাদের একে অপরের প্রতি যাতে শ্রদ্ধাবোধ থাকে, সে দিকে নজর রাখতে হবে।’’

Advertisement
আরও পড়ুন