আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
নতুন শুল্কনীতি থেকে কোনও দেশকেই ছাড় দেওয়া হবে না। চিনকে তো একেবারেই নয়। আরও এক বার হুঁশিয়ারির সুরে সেই বার্তাই দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত শুক্রবার তাঁর দফতর থেকে মোবাইল, কম্পিউটার, সেমিকন্ডাক্টরের মতো পণ্যের উপর শুল্কছাড় ঘোষণা করা হয়েছিল। রবিবার তা-ও অস্বীকার করলেন ট্রাম্প। জানিয়ে দিলেন, কোনও পণ্যে কোনও ছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়নি।
সমাজমাধ্যমে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘‘ভারসাম্যহীন বাণিজ্যনীতির জন্য কাউকে রেয়াত করা হবে না। বিশেষত, চিনকে তো একেবারেই ছাড় দেওয়া যাবে না। এখনও পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে সবচেয়ে খারাপ আচরণ করেছে ওরাই।’’ শুক্রবারের ঘোষণার কথা অস্বীকার করে ট্রাম্প এর পর লেখেন, ‘‘গত শুক্রবার কোনও শুল্কছাড়ের কথা ঘোষণা করা হয়নি। এই পণ্যগুলির উপর আগে থেকেই ২০ শতাংশ শুল্ক ছিল। তাই প্রযুক্ত রয়েছে। এগুলিকে শুধু অন্য এক শুল্কনীতির আওতায় আনা হচ্ছে মাত্র। যারা ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে, তারা সত্যিটা ভাল করেই জানে।’’
চিনা পণ্যের উপর শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করে দিয়েছেন ট্রাম্প। পাল্টা চিন ১২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে মার্কিন পণ্যে। এই আবহে গত শুক্রবার (ভারতীয় সময়ে শনিবার) আমেরিকার শুল্ক এবং সীমান্ত সুরক্ষা দফতরের নতুন নির্দেশনামা প্রকাশ্যে এসেছিল। তাতে বলা হয়েছিল, স্মার্টফোন এবং কম্পিউটারের মতো কিছু পণ্যের উপর নয়া শুল্কনীতি কার্যকর হবে না। এই ধরনের পণ্য অধিকাংশই আমেরিকায় আমদানি করা হয় চিন থেকে। ফলে মনে করা হয়েছিল, চিনের উপর কিছুটা হলেও ‘নরম’ হচ্ছেন ট্রাম্প। কিন্তু রবিবার সেই সম্ভাবনায় ইতি টেনে দিলেন নিজেই।
চিন-সহ একাধিক দেশের উপর পারস্পরিক শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। ভারতের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ ছিল ২৬ শতাংশ। ৯ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। তার আগে হোয়াইট হাউস এই বর্ধিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করে দেয়। কিন্তু স্থগিতাদেশ সব দেশের ক্ষেত্রে প্রযুক্ত হলেও ব্যতিক্রম ছিল চিন। পাল্টা চিনের পণ্যে শুল্কের পরিমাণ বাড়িয়ে দেন ট্রাম্প। চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের শুল্কনীতির জেরে আমেরিকার বাজার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। চলতি বছরে আমেরিকার অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছেন অর্থনীতিবিদেরা। কিন্তু ট্রাম্প নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি জানিয়েছেন, সেমিকন্ডাক্টর-সহ বৈদ্যুতিন পণ্যের সমগ্র উৎসই জাতীয় সুরক্ষার স্বার্থে তদন্ত করে দেখা হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দেশ আরও বড় হবে, আরও ভাল হবে এবং আরও শক্তিশালী হবে। আমরা আবার আমেরিকাকে মহান করে তুলব।’’