লি কুইয়াংকে নয়া প্রধানমন্ত্রী বাছলেন শি জিনপিং। ছবি: রয়টার্স।
তৃতীয় বারের জন্য চিনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েই দেশের প্রধানমন্ত্রী বদলে দিলেন শি জিনপিং। তাঁর প্রস্তাব মেনে সে দেশের পার্লামেন্ট, ‘ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস’-এর বার্ষিক অধিবেশনে আগামী ৫ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জিনপিংয়ের ঘনিষ্ঠ অনুগামী লি কুইয়াংয়ের নাম অনুমোদন করেছে। তিনি বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াংয়ের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ২০১৩ সাল থেকে চিনের প্রধানমন্ত্রী পদে ছিলেন খ্যছিয়াং।
কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ন্ত্রিত একদলীয় চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে ২,৯৩৬ জন প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রী পদে কুইয়াংকে সমর্থন করেছেন। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে মাত্র ৩ জন। ৮ জন প্রতিনিধি ভোটাভুটিতে অংশ নেননি।
একটি পাম্পিং স্টেশনের শ্রমিক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন কুইয়াং। চিনা কমিউনিস্ট পার্টির শ্রমিক শাখার কাজ করেছেন তিনি। এর পর পুরসভা স্তরে রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ। ২০১৭ থেকে সাংহাই শহর কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদকের পদে ছিলেন তিনি। নতুন শতকের গোড়ায় জিনপিংয়ের ‘চিফ অব স্টাফ’ ছিলেন কুইয়াং। জিনপিং তখন ঝেজিয়াং প্রদেশের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান। ২০১২ সালে জিনপিং প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে কুয়াংকে ওই প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত করেন।
গত অক্টোবরে তৃতীয় বারের জন্য চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসাবে নিজের স্থান সুনিশ্চিত করেছিলেন জিনপিং। পাশাপাশি, কমিউনিস্ট পার্টির ২০তম জাতীয় কংগ্রেসে নিজের ঘনিষ্ঠ নেতাদেরও দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। সে সময় চিনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি সূত্র জানিয়েছিল, দীর্ঘ দিন নেতৃত্বের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টনের পর্ব চলার পরে একক ব্যক্তির শাসনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। এ বার প্রধানমন্ত্রী বদলের মাধ্যমে সেই বৃত্তই সম্পূর্ণ হল।
আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার আশঙ্কা, এই কেন্দ্রীভূত নিরঙ্কুশ ক্ষমতা জিনপিংকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও বেপরোয়া করে তুলবে। তাঁর ক্ষমতা যত একচেটিয়া হবে, আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিনের ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা তত বাড়বে। ইউক্রেন যুদ্ধ এবং তাইওয়ান সঙ্কটের আবহে চিনের মতো শক্তিশালী রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নেতা ইতিমধ্যেই বার্তা দিয়েছেন, দেশের কূটনীতি এবং রণনীতিকে আরও আগ্রাসী করতে তিনি বদ্ধপরিকর। ফলে আগামী দিনে চিনের সঙ্গে বাকি বিশ্বের সংঘাত নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে আশঙ্কা।