মৌলানা মাসুদ আজহার। ফাইল চিত্র।
জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের মাথা মৌলানা মাসুদ আজহার আফগানিস্তানে নেই বলে জানিয়ে দিল তালিবান। এ বিষয়ে পাকিস্তানের অভিযোগ আফগান তালিবান সরকার খারিজ করেছে। তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘‘মাসুদ আজহার আফগানিস্তানের মাটিতে নেই। সে কথা আমরা জানিয়েও দিয়েছি।’’
জঙ্গিগোষ্ঠী প্রধান মাসুদকে খুঁজে বার করে গ্রেফতার করার অনুরোধ জানিয়ে আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে সম্প্রতি চিঠি পাঠিয়েছিল পাকিস্তান। আফগানিস্তানের নঙ্গরহার বা কুনার এলাকায় মাসুদ লুকিয়ে থাকতে পারেন জানিয়ে তালিবান সরকারের বিদেশ দফতরকে ইসলামাবাদের তরফে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স’ (এফএটিএফ)-এর ধূসর তালিকা থেকে বেরোনোর উদ্দেশ্যে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে লোকদেখানো তৎপরতা শুরু করতে চাইছে পাকিস্তান। সে কারণেই তালিবান সরকারকে ওই চিঠি। অক্টোবর মাসে এফএটিএফ-এর প্লেনারি রয়েছে। তার আগে ‘তৎপরতা’ দেখানোই পাকিস্তানের উদ্দেশ্য বলে মনে করা হচ্ছে।
গত বছর পাকিস্তানের গুজরানওয়ালার সন্ত্রাস বিরোধী আদালত (অ্যান্টি টেররিজম কোর্ট) নাশকতায় আর্থিক মদত দেওয়ার অভিযোগের একটি মামলায় মাসুদ-সহ জইশ-ই-মহম্মদের কয়েক জন জঙ্গির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। কিন্তু পাক সরকার তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি। প্রসঙ্গত, এফএটিএফ কোনও দেশকে ‘কালো তালিকা’য় ঢোকানোর আগে দু’টি পর্যায়ের মধ্যে দিয়ে যায়। একটি ‘ধূসর’। অন্যটি ‘আরও বেশি ধূসর’। এই দু’টি তালিকাভুক্ত করে এফএটিএফ-এর তরফে সংশ্লিষ্ট দেশকে দু’বার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
মাসুদ আফগানিস্তানে রয়েছে বলে পাকিস্তান যে দাবি করেছে, তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সংশয় রয়েছে ভারতেরও। গোয়েন্দা আধিকারিকদের একাংশের মতে, আইএসআই-এর তদারকিতে পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরে নিরাপদে রয়েছেন মাসুদ। রাওয়ালপিন্ডির হাসপাতালে তিনি যাওয়া-আসা করেন বলেও ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে খবর। ভারতের তরফে উদ্বেগের বিষয়, এফএটিএফ পাকিস্তানের দাবিদাওয়া বিশ্বাস করবে কি না।