মরুভূমির কারাগারে বন্দি প্যালেস্টানিরা
Israel-Hamas Conflict

ধর্ষণ-নিগ্রহে অভিযুক্ত ইজ়রায়েলি সেনাদের মুক্তির দাবি, বিক্ষোভ

মধ্য ইজ়রায়েলের বিট লিড শহরের ওই সেনাঘাঁটি কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর অতি দক্ষিণপন্থী সদস্যদের একাংশ। মুখোশধারী ইজ়রায়েলি সেনাদের দাবি ছিল, অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত সেনাদের।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
জেরুসালেম শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২৪ ০৮:২১
ইজ়রায়েলের গোলান হাইটসে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হানা আর তার জেরে ১২ নাবালকের মৃত্যু নিয়ে জটিলতা এখনও কাটেনি।

ইজ়রায়েলের গোলান হাইটসে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হানা আর তার জেরে ১২ নাবালকের মৃত্যু নিয়ে জটিলতা এখনও কাটেনি। —ফাইল চিত্র।

জেলবন্দি প্যালেস্টাইনি নাগরিকদের ধর্ষণ, যৌন অত্যাচার, নৃশংস ভাবে মারধরে অভিযুক্ত তারা। ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর এমন অন্তত ১০ জন সদস্যকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বিট লিড শহরের সামরিক ঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ বার অভিযুক্ত সেই সব ইজ়রায়েলি সেনার মুক্তির দাবিতে গত কাল ওই সেনাঘাঁটিতে বিক্ষোভ দেখালেন তাদের
সহকর্মীদের একাংশ। ইজ়রায়েলের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম একযোগে এই খবর জানিয়েছে।

Advertisement

মধ্য ইজ়রায়েলের বিট লিড শহরের ওই সেনাঘাঁটি কার্যত অবরুদ্ধ করে রেখেছিলেন ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনীর অতি দক্ষিণপন্থী সদস্যদের একাংশ। মুখোশধারী ইজ়রায়েলি সেনাদের দাবি ছিল, অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত সেনাদের। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন দাবি করেছিল, ইজ়রায়েলের নেগেভ মরুভূমির কাছে অবস্থিত একটি কারাগারে অসংখ্য প্যালেস্টাইনি বন্দির উপরে গণধর্ষণ, অকথ্য যৌন অত্যাচার আর মারধরের অভিযোগ রয়েছে আটক ওই ইজ়রায়েলি সেনাদের বিরুদ্ধে।
নারী-পুরুষ বন্দি নির্বিশেষে চলত অত্যাচার। প্যালেস্টাইনি পুরুষ বন্দিদেরও সেনার এই যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে, এমন উদাহরণও রয়েছে। অভিযোগ পেয়ে আটক করা হয় বাহিনীরই কয়েক জন সেনাকে। কিন্তু ইজ়রায়েলি সেনারই একাংশ এখন দাবি জানাচ্ছে, অবিলম্ব মুক্তি দিতে হবে আটক সেনাদের। সম্প্রতি ইজ়রায়েলের সেনেটেও দক্ষিণপন্থীদের একাংশ যুক্তি দিয়ে বলেছেন, গাজ়া ভূখণ্ড থেকে বন্দি করা প্যালেস্টাইনি নাগরিকদের
উপরে সেনাবাহিনীর যৌন অত্যাচার ‘বৈধ’। তবে নেতানিয়াহু সরকার সাম্প্রতিক এই সেনা বিদ্রোহ নিয়ে এখনও পর্যন্ত নীরব। বিক্ষোভের মুখে আটক ইজ়রায়েলি সেনাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে কি না, তা-ও এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট নয়।

এ দিকে, ইজ়রায়েলের গোলান হাইটসে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হানা আর তার জেরে ১২ নাবালকের মৃত্যু নিয়ে জটিলতা এখনও কাটেনি। ঘন জনবসতিপূর্ণ বেরুট শহরের উপরে যাতে ইজ়রায়েলি সামরিক বাহিনী বোমাবর্ষণ না করে, তার জন্য আগেই নেতানিয়াহু সরকারকে অনুরোধ করেছিল লেবানন সরকার। কিন্তু হিজ়বুল্লাকে নিশ্চিহ্ন করতে উদ্যত ইজ়রায়েল আদৌ লেবাননের আবেদনে কান দেবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যস্থতাকারী। যদিও লেবাননের সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সচেষ্ট আমেরিকার জো বাইডেন প্রশাসন। লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার এলিয়াস বো সাব ইতিমধ্যেই আমেরিকান মধ্যস্থতাকারীর সঙ্গে কথা বলেছেন। বেরুট ও তার আশপাশের এলাকায় যাতে আকাশ হামলা না হয়, তার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন কার্বি। তবে ইজ়রায়েল সরকার যে বেরুটে আঘাত হানতে অনড় বলে কয়েকটি দেশের মধ্যস্থতাকারী খুব সম্প্রতি দাবি করেছেন, তা নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি জন।

এ দিকে, তুরস্কের উপরে চাপ বাড়াতে শুরু করেছে ইজ়রায়েল সরকার। সম্প্রতি প্যালেস্টাইনের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোয়ান। ইজ়রায়েলের মাটিতে সামরিক বাহিনী পাঠানোর হুমকিও দিয়েছেন তিনি। আর তাতেই ক্ষুব্ধ ইজ়রায়েলি সরকার। ইজ়রায়েলের বিদেশমন্ত্রী ইজ়রায়েল কাৎজ় নিজের দেশের কূটনীতিকদের নেটো কর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার নির্দেশ দিয়েছেন। উদ্দেশ্য, অবিলম্বে নেটো থেকে তুরস্ককে বহিষ্কার করা। তবে তাতে সাফল্য আসবে কি না, সে প্রশ্ন থাকছে।

আরও পড়ুন
Advertisement