Donald Trump

ট্রাম্প ফিরছেন ধরে নিয়ে আশাবাদী দিল্লি

মোদীর রাশিয়া সফরের পরে আমেরিকা এবং ইউক্রেনের দিক থেকে বার বার ধাক্কা আসছে। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে ‘ভুল ঘোড়ার উপরে বাজি ধরছে ভারত’।

Advertisement
অগ্নি রায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৩
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

নরেন্দ্র মোদী প্রশাসন অনেকটাই নিশ্চিত, নভেম্বরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের জিতে আসছেন ‘বন্ধু’ ডোনাল্ড ট্রাম্প। কূটনৈতিক শিবিরের খবর, সফরের স্পর্শকাতরতা এবং পশ্চিমের আতশকাচকে কতকটা উপেক্ষা করেই প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর মস্কো সফরে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উষ্ণ আলিঙ্গন করেছেন। আগামী দিনে রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র, সমর সরঞ্জাম এবং অশোধিত তেল কেনার রাস্তাও প্রশস্ত করে এসেছেন তিনি। সূত্রের মতে, প্রাণনাশের চেষ্টার পরে রক্তাক্ত ট্রাম্প যে ভাবে উঠে দাঁড়িয়ে মুষ্টিবদ্ধ হাত ছুড়েছেন, তাতে তাঁর জয় নেহাতই সময়ের অপেক্ষা বলে মনে করছেন মোদী শিবির এবং বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীর ব্যক্তিগত রসায়ন নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী সাউথ ব্লক। এর পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের আন্তর্জাতিক নীতি ভারতের পক্ষে সুবিধাজনক বলেও মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

মোদীর রাশিয়া সফরের পরে আমেরিকা এবং ইউক্রেনের দিক থেকে বার বার ধাক্কা আসছে। আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে ‘ভুল ঘোড়ার উপরে বাজি ধরছে ভারত’। দিল্লিতে নিযুক্ত আমেরিকান রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য, আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বকে যেন ‘পড়ে পাওয়া’ না ভাবে ভারত। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি বলেছেন, ‘বিশ্বের সবচেয়ে বড় অপরাধীকে’ আলিঙ্গনের দৃশ্য ‘তীব্র হতাশাজনক’। এটাও তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় যে, মোদীর রাশিয়া সফরের এক দিন পরেই জ়েলেনস্কি ওয়াশিংটনে গিয়ে নেটো সম্মেলনে যোগ দেন। তাঁকে প্রায় নায়কের সম্মান দিয়েছে পশ্চিম বিশ্ব।

ঘটনা হল, কৌশলগত মিত্র পরম শক্তিধর আমেরিকাকে এতটা চটিয়ে রাশিয়ার প্রশ্নে একবগ্গা থাকার আত্মবিশ্বাস কোথা থেকে আসছে নয়াদিল্লির? কূটনৈতিক শিবিরের মতে, গত কয়েক বছরে বহুপাক্ষিক জটিল সম্পর্কে ভারসাম্য বজায় রাখার আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে মোদীর নেতৃত্বাধীন সরকারের। আর এ ক্ষেত্রে ধরে নেওয়া হচ্ছে, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসছেন এবং তার ফলে মস্কো সম্পর্কে অতি কঠিন অবস্থান কিছুটা হলেও নরম হবে হোয়াইট হাউসের। উল্লেখ্য, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে গত নির্বাচনের ফল বদলানোর চেষ্টার অভিযোগ ওঠার পরে পুতিন বলেছিলেন, ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মামলা করা হয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।

ট্রাম্পের উপরে সাম্প্রতিক হামলার পরেই মোদী সমাজমাধ্যমে যে পোস্টটি করেছেন, সেখানে তিনি ট্রাম্পকে ‘আমার বন্ধু’ বলে সম্বোধন করেছেন। এমন মন্তব্যের একটি ব্যক্তিগত মাত্রা আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। ২০১৯-এ হিউস্টনে ‘হাউডি মোদী’ এবং তার পরে আমদাবাদে ‘নমস্তে ট্রাম্প’ অনুষ্ঠানে দুই নেতার যে রসায়ন বিশ্ববাসী দেখেছিল, নভেম্বরের পরে সেই ভাষ্য আবার ফিরে আসবে বলেই আশা করছে সাউথ ব্লক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্তার মতে, “আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদটির নির্বাচনের ফলাফল এখনই বোঝা যাচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতীয় নেতৃত্বের তাতে খুশি হওয়ার কথা। দ্বিতীয় ট্রাম্প সরকার এলে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক নিয়ে যে বিরাট মাথা ঘামাবে না, তা এখনই বলা যায়।” এটা ঘটনা যে, প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ট্রাম্পের মূল কৌশলগত লক্ষ্য ছিল, মস্কোর চেয়েও বেশি বেজিংয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতা। এই বিশ্ব-নীতি নয়াদিল্লির পক্ষে সুবিধাজনক।

আরও পড়ুন
Advertisement