ইমরান খান-নরেন্দ্র মোদী। ফাইল চিত্র।
ইমরান খান কাণ্ডে পাকিস্তানে কী সিদ্ধান্ত হয় তা স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও অবস্থান নিতে চাইছে না নয়াদিল্লি। বরং অপেক্ষা করা হচ্ছে সে দেশের সেনাবাহিনী ও সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছয় তার উপরে। তার আগে আগ বাড়িয়ে এ নিয়ে মন্তব্য করা কূটনৈতিক ভাবে মুর্খামি হবে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক।
পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জটিলতা বহুস্তরীয়। সে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, মোল্লাতন্ত্র, আইএসআই, সেনাবাহিনী-প্রত্যেকটি ক্ষেত্রই স্পর্শকাতর ও একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তার উপরে অধুনা বেজিং-এর সঙ্গে পাকিস্তানের ‘সব আবহাওয়ার বন্ধুত্বকে’ মাথায় রাখতে হচ্ছে দিল্লিকে। আর এই মুহূর্তে সীমান্ত প্রশ্নে ভারতের চাপের শেষ নেই। তবে রাজনৈতিক শিবির বলছে, পাক পরিস্থিতি স্পষ্ট হলে দেশের রাজনৈতিক হাওয়া বুঝে অবশ্যই মোদী সরকার যে ভারতীয় গণতন্ত্র ও সংবিধানের গরিমাকে তুলে ধরবে তা অনুমান করাই যায়। তবে এই মুহূর্তে সামনে কোনও নির্বাচন নেই। তাই জাতীয়তাবাদের প্রশ্ন তুলে পাকিস্তানকে আক্রমণ শানানোর কোনও আশু প্রয়োজন দেখছে না রাজনৈতিক শিবির। পরিবর্তে জাতীয় নিরাপত্তা ও সীমান্তের স্পর্শকাতরতার কথা মাথায় রেখে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছে নয়াদিল্লি।
আজ কার্যত ইমরানের হারা ম্যাচ জিতিয়ে দেন ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ তকমা দিয়ে বাতিল করে দেন সুরি। ইমরানের প্রস্তাব মেনে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি সরকার ভেঙে দিয়ে ভোটের নির্দেশ দিয়েছেন। সব ঠিক থাকলে তিন মাসের মধ্যে ভোট হতে চলেছে পাকিস্তানে। অন্য দিকে বিরোধীরা ছুটেছেন সুপ্রিম কোর্টে। ফলে আগামিকাল সুপ্রিম কোর্ট কী রায় দেয় তার উপরে পাকিস্তানের রাজনৈতিক গতিবিধি অনেকটাই নির্ভর করছে বলেই মনে করছে সাউথ ব্লক।
ফলে ঘটনাপ্রবাহের উপরে নজর রাখছে ভারত। তবে নয়াদিল্লির কাছে একটি বিষয় স্পষ্ট। তা হল ইমরান যদি সরেও যান সে ক্ষেত্রেও ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে তার বিশেষ প্রভাব পড়বে না। তার একটি বড় কারণ হল পাকিস্তানের ভারত নীতি সে দেশে জিতে আসা প্রধানমন্ত্রী বা সরকার স্থির করেন না। তা মূলত নিয়ন্ত্রণ করে থাকে সেনা ও আইএসআইয়ের একাংশ। তাই এ ক্ষেত্রে ইমরান প্রশ্নে সেনাবাহিনীর অবস্থান কী তা বুঝে নিতে চাইছে ভারত। কারণ গত কালই দ্বিপাক্ষিক সমস্যা মেটাতে আলোচনার উপরে জোর দিয়েছেন পাক সেনাপ্রধান কমর জাভেদ বাজওয়া।