আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্সের ভেঙে পড়া বিমান থেকে ২৯ জন যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
৬৭ জনকে নিয়ে কাজ়াখস্তানের আকতু শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ভেঙে পড়েছিল আজ়ারবাইজানের বিমান। তাতে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বেঁচেও ফিরেছেন ২৯ জন। বিমানটি টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। তবু কী ভাবে সম্ভব হল এই ‘অসম্ভব’? এ ক্ষেত্রে, বিমানকর্মী এবং চালকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়, জানিয়েছে আজ়ারবাইজান এয়ারলাইন্স। বিমানের দুই পাইলটকে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছে সংস্থা। তাঁদের উদ্দেশে বিশেষ সম্মানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দু’জনের কেউই বেঁচে নেই। তবে তাঁদের তৎপরতাতেই এত মানুষের প্রাণ বেঁচেছে বলে দাবি ওই সংস্থার।
গত ২৫ ডিসেম্বর আজ়ারবাইজান থেকে রাশিয়ার দিকে যাচ্ছিল যাত্রিবাহী বিমানটি। খারাপ আবহাওয়ার কারণে কাজ়াখস্তানে তা ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। জরুরি অবতরণের আবেদন জানিয়েছিলেন পাইলট। কিন্তু তার আগেই কাসপিয়ান সাগরের তীরে বিমানটি ভেঙে পড়ে। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, জমি স্পর্শ করার মুহূর্তেই বিমানটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। পরে সেই আগুন নিভিয়ে একে একে যাত্রীদের বার করে আনা হয়। (এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।)
আমেরিকার টাইম ম্যাগাজ়িনে ২০১৫ সালে একটি পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে কয়েক বছরের তথ্য ঘেঁটে দেখানো হয়েছিল, বিমানের কোন দিকের আসনে বসলে দুর্ঘটনার পরেও মৃত্যুর হার কম থাকে। ১৯৮৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত বিমানের তথ্য ঘেঁটে পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, বিমানের একদম পিছনের দিকের আসনে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩২ শতাংশ, মাঝের আসনগুলিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩৯ শতাংশ এবং সামনের দিকের আসনে মৃত্যুর সম্ভাবনা ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ, পিছনের দিকের আসনগুলিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা তুলনামূলক কম। তবে পরিসংখ্যান বলছে, পিছনের দিকের মাঝের আসনগুলিতে মৃত্যুর সম্ভাবনা সবচেয়ে কম— ২৮ শতাংশ।
বিমান দুর্ঘটনার পর কাজ়াখস্তানের যে সমস্ত ছবি প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বিমানের বেশির ভাগ অংশই ক্ষতিগ্রস্ত। তবে পিছনের দিকের অংশটি অক্ষত রয়েছে। সেখান থেকে কিছু যাত্রীকে বার করে আনতেও দেখা গিয়েছে উদ্ধারকারীদের। সংস্থার দাবি, তাদের কর্মীদের তৎপরতাতেই ২৯ জনের প্রাণ বেঁচেছে। দুর্ঘটনা আঁচ করে যাত্রীদের বিমানের পিছনে তুলনামূলক নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তাই অনেককে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যদিও অনেকেই মেনে নিচ্ছেন, দুর্ঘটনার অভিঘাত আরও মারাত্মক হলে বিমানের পিছনের আসনে বসলেও কাউকে বাঁচানো যেত না।