টানা তুষারপাতে শহর আপাতত বরফের চাদরের নীচে। —ফাইল চিত্র।
কখনও নরম রোদ, কখনও একটু মেঘলা— গত কয়েক দিন ধরে এমনই ছিল আবহাওয়া। শ্রীনগরে পৌঁছে এমন আবহাওয়া পেয়ে খুশি হয়েছিলাম সবাই। ডাল লেকে ভাসতে থাকা বরফ সরিয়ে চলছিল শিকারা-ভ্রমণ। তাল কাটল শুক্রবার বিকেল থেকে। টানা তুষারপাতে শহর আপাতত বরফের চাদরের নীচে। হোটেলে আটকে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটক।
শুক্রবার বিকেল ৩টে নাগাদ শ্রীনগর শহরে শুরু হয় হালকা তুষারপাত। ক্রমশ তা বাড়তে থাকে। রাস্তাঘাটে লোকজন কমে। রাতের মধ্যে পুরো শহর ঢেকে যায় বরফের পুরু আস্তরণে। তুষারপাতের জেরে মাঝরাতে বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রায় ১৪ ঘণ্টা পরে, শনিবার দুপুরে ফিরেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে রুম হিটার, ইলেকট্রিক ব্ল্যাঙ্কেট কাজ না করায় ঠান্ডায় কষ্টে রাত কাটাতে হয় অনেককেই।
শনিবার সকাল ১০টার পরে কিছু ক্ষণ তুষারপাত বন্ধ ছিল। কিন্তু তার পরে ফের শুরু হয়। কোনও রকমে বরফ সরিয়ে প্রধান রাস্তাগুলিতে যান চলাচল হচ্ছে। শহরের ভিতরের রাস্তায় বরফ ও জল একাকার, কাদায় কাদা। যাতায়াতে চরম সমস্যা হচ্ছে।
কলকাতা, দুর্গাপুর-সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা বহু পর্যটক উঠেছেন ডাল লেকের আশপাশের হোটেলে। শনিবার সকালে অনেকের পহেলগাঁও যাওয়ার কথা ছিল। বরফে রাস্তা ঢেকে যাওয়ায় তা হয়নি। রবিবার জম্মু গিয়ে রাতে ফেরার ট্রেন ধরার কথা অনেকের। তাঁরা ভেবেছিলেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে শনিবার দুপুরের পরেই জম্মু রওনা হবেন। কিন্তু প্রশাসন জানিয়ে দেয়, জম্মু-শ্রীনগর সড়কে আপাতত যান চলাচল বিপজ্জনক। তাই সেই পরিকল্পনাও বাতিল করতে হয়। শ্রীনগরের হোটেলে বসে উৎকণ্ঠায় দিনটি কাটান তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে সোনমার্গ, গুলমার্গ যাওয়ার পরিকল্পনাও বাতিল হতে পারে বলে আশঙ্কা পর্যটকদের।
ডায়মন্ড হারবার থেকে আসা অর্পণ সাহা জানান, শুক্রবার সকালে তাঁরা কাটরা থেকে পহেলগাঁও রওনা হন। পহেলগাঁও থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে গাড়ি আটকে দেওয়া হয়। বলা হয়, তখন পহেলগাঁও কয়েক ফুট বরফে ঢাকা। সেখান থেকে ৬৩ কিলোমিটার রাস্তা বরফ সামলে শ্রীনগরে আসতে লেগেছে ৯ ঘণ্টা। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আজাদ জানান, এই পরিস্থিতি চললে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, রবিবার দুপুর পর্যন্ত এই পরিস্থিতি চলতে পারে। তাতে সমস্যা বাড়বে। কখন আবহাওয়া স্বাভাবিক হবে, হোটেল থেকে তাঁরা বেরোতে পারবেন, সেই অপেক্ষায় পর্যটকেরা।