Dubai

ফের বৃষ্টির শঙ্কা দুবাইয়ে, চিন্তা বাড়াচ্ছে ইউরোপ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায় গোটা পৃথিবী জুড়েই স্পষ্ট। মরুভূমির দেশের বৃষ্টি হচ্ছে, মেরু অঞ্চলে হিমবাহ গলছে। সম্প্রতি ওমানে প্রবল ঝড় হয়। ২০ জনের মৃত্যু হয় সে দেশে।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
দুবাই শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৫:১৬
ফের বৃষ্টির আশঙ্কা দুবাইয়ে।

ফের বৃষ্টির আশঙ্কা দুবাইয়ে। ছবি: রয়টার্স।

এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই ফের সতর্কবার্তা। ফের বৃষ্টির আশঙ্কা দুবাইয়ে। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির আবহাওয়া অফিস ‘দ্য ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটেরিয়োলজি’ (এনসিএম) জানিয়েছে, ফের বৃষ্টি হলেও তা গত বারের মতো ভয়াবহ কোনও ভাবেই হবে না। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে সোমবার রাতে। বুধবার নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। তবে তাপমাত্রা ৫-৭ ডিগ্রি কমতে পারে।

Advertisement

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায় গোটা পৃথিবী জুড়েই স্পষ্ট। মরুভূমির দেশের বৃষ্টি হচ্ছে, মেরু অঞ্চলে হিমবাহ গলছে। সম্প্রতি ওমানে প্রবল ঝড় হয়। ২০ জনের মৃত্যু হয় সে দেশে। তার পরে সেই ঝড়-বৃষ্টি ধেয়ে যায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে। গত সপ্তাহে ওই এক দিনে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, ৭৫ বছরে তেমন কোনও রেকর্ড নেই। চার দিন ধরে জলে ডুবে ছিল দুবাই বিমানবন্দর। আবু ধাবি, শারজার অবস্থাও শোচনীয় হয়েছিল।

এনসিএম-এর জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আহমেদ হাবিব বলেন, ‘‘চিন্তার কিছু নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আর যাই হোক, ভারী বৃষ্টি হবে না। গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনার প্রশ্নই নেই। মাঝারি বৃষ্টি হবে। মেঘ পশ্চিম উপকূল থেকে সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে ঢুকছে।’’

দুবাই চিন্তার না বললেও ইউরোপ জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্রবল আতঙ্কে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, যে হারে গরম বাড়ছে, তাতে প্রকৃতি, মানুষের শরীরস্বাস্থ্য, অর্থনীতি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আজ দু’টি শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা তাদের রিপোর্টে দাবি করেছে, সবচেয়ে দ্রুত গতিতে উষ্ণতা বাড়ছে ইউরোপের। বিশ্বের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির প্রায় দ্বিগুণ। এর জেরে মানুষের স্বাস্থ্যের ক্ষতি তো হবেই, সেই সঙ্গে হিমবাহ আরও গলবে, অর্থনীতিতেও প্রভাব পড়বে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ‘ওয়ার্ল্ড মেটেরিয়োলজিক্যাল অর্গানাইজেশন’ (ডব্লিউএমও)-এর তথ্য অনুযায়ী, শিল্প আসার আগে যে তাপমাত্রা ছিল ইউরোপে, এখন তার ২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গোটা বিশ্বের থেকে ১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। ডব্লিউএমও এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জলবায়ু সংস্থা ‘কোপারনিকাস’— দু’জনেই এই তথ্য দিয়েছে। কোপারনিকাসের উপপ্রধান এলিসাবেথ হামডোচ বলেন, ‘‘আবার একটা বছর, ইউরোপে গরম আরও বাড়ছে। চরম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। রেকর্ড তাপমাত্রা, দাবানল, তাপপ্রবাহ, হিমবাহ গলে যাওয়া, বরফ কম পড়া।’’

ডব্লিউএমও ও কোপারনিকাস, দু’টি সংস্থারই বক্তব্য, অবিলম্বে কৌশলগত পথে জলবায়ু পরিবর্তন রোখার চেষ্টা করতে হবে ইউরোপকে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি, যেমন বায়ু, সৌরশক্তি, জলবিদ্যুৎ শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। গত বছর ইউরোপে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে, তার ৪৩ শতাংশ উৎপাদন হয়েছে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি থেকে। তার আগের বছর এর পরিমাণ ছিল ৩৬ শতাংশ। কিন্তু এতেও ক্ষয়ক্ষতি রোখা যাচ্ছে না। গত বছর গরমের প্রত্যক্ষ কারণেই ১৫০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। পরোক্ষ মৃত্যু আরও বেশি। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে ২০২৩ সালে অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছিল ১৩৪০ কোটি ইউরো। এ বারে তা কোথায় পৌঁছয়, সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন
Advertisement