(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
বিভিন্ন দেশের উপর ‘পারস্পরিক শুল্ক’ আরোপের ঘোষণা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর শুল্ক-বাণের হাত থেকে রেহাই পায়নি ভারতও। শুল্ক সংক্রান্ত সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমঝোতার রাস্তাও খুলে দিলেন তিনি। জানালেন, শুল্কের হাত থেকে রেহাই পেতে হলে দেশগুলিকে এমন কিছু আমেরিকাকে দিতে হবে, যা এর আগে পাওয়া যায়নি। আমেরিকার জন্য কোনও দেশ ‘অভূতপূর্ব’ কিছু করলেই তাকে শুল্কে ছাড় দেবেন ট্রাম্প। এর জন্য চিনকে কী করতে হবে, তা-ও তিনি বলে দিয়েছেন। শুল্ক ঘোষণার এক দিন পর ট্রাম্পের হুঙ্কার, ‘‘আমেরিকাই এখন চালকের আসনে। আমেরিকা যা বলবে, বাকিরা তা করতে বাধ্য হবে।’’ আমেরিকার বাণিজ্যকে শক্তিশালী করে তুলতে, বিশ্বের বাজারে সার্বিক ভাবে আমেরিকার আধিপত্য কায়েম করতে ট্রাম্প যে নীতি নিয়েছেন, তা জেনে অনেকের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতার লাইন মনে পড়তে পারে, ‘দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে...’।
শুল্কনীতিতে সমঝোতার বিষয়ে আমেরিকার একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘অন্য দেশগুলি আমাদের থেকে যা নেয়, তার ভিত্তিতে আমরাও শুল্ক নির্ধারণ করেছি। এটি পারস্পরিক শুল্ক। এই শুল্ক ঘোষণার পরেই অনেক দেশ আমাকে ফোন করেছে। এটাই সবচেয়ে সুন্দর বিষয়। আমরা নিজেদের চালকের আসনে বসাতে পেরেছি। এ বার যদি এই দেশগুলির কাছ থেকে আমরা কিছু চাই, শুল্কের হাত থেকে ছাড় পাওয়ার জন্য যা করতে বলব, ওরা তা-ই করবে।’’ এর পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট সমঝোতার বার্তা দিয়ে বলেন, ‘‘কোনও দেশ যদি আমাদের অভূতপূর্ব কিছু দিতে রাজি হয়, তা হলে ভাল। আমরা সমঝোতার পথে এগোব।’’
চিনের পণ্যের উপরেও শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। কী করলে চিন সেই শুল্কের হাত থেকে রেহাই পেতে পারে, বৃহস্পতিবার তা বলেছেন তিনি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, টিকটক চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হলে চিনের সঙ্গে শুল্কের বিষয়ে আমেরিকা সমঝোতার পথে হাঁটতে পারে। টিকটক অ্যাপটিকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে টিকটকের আমেরিকান ইউনিটকে চিন ছাড়া অন্য কোনও মালিক খুঁজতে হবে। তা না-হলে অ্যাপটি আমেরিকায় নিষিদ্ধ করে দেওয়া হবে। সে বিষয়ে চুক্তিতে চিন রাজি হলে তাদের পণ্যে শুল্ক ছাড় দিতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার গভীর রাতে শুল্ক ঘোষণা করেন ট্রাম্প। ভারতের পণ্যে চাপানো হয়েছে ২৬ শতাংশ বাড়তি শুল্ক। এ ছাড়াও তালিকায় রয়েছে চিন, জাপান, ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো অনেক দেশ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির উপরেও শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এই শুল্কনীতিরই সমালোচনায় সরব হয়েছেন রাষ্ট্রনেতারা।