সেনার সঙ্গে ইমরানের সমর্থকদের সংঘর্ষ পাকিস্তানে। ছবি: পিটিআই।
পাকিস্তানের জেলবন্দি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ডাকে সোমবার ইসলামাবাদের পথে নেমেছিলেন হাজার হাজার মানুষ। সেই বিক্ষোভ মিছিল ক্রমে সংঘর্ষের আকার নিয়েছে। পুলিশ ও নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয়েছেন। নিহত হয়েছেন পাঁচ জন নিরাপত্তাকর্মী। পরিস্থিতি এমনই যে, ইমরানের সমর্থকদের দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে পাক-সেনা।
রবিবার ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে রাজধানীর উদ্দেশে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর কর্মী ও সমর্থকেরা। সোমবার সন্ধ্যায় মিছিল ইসলামাবাদে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারীরা আরও এগোনোর সিদ্ধান্ত নিলে নামানো হয় সেনাবাহিনী। সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, এর পরেই পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে ইমরানের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। বিক্ষোভকারীদের গুলিতে এক জন পুলিশকর্তার মৃত্যু হয়েছে। নিহত হয়েছেন আরও চার জন নিরাপত্তাকর্মী। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সংঘর্ষের জেরে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছোড়া হয়েছে কাঁদানে গ্যাস। এমনকি, ইমরানের সমর্থকদের দেখামাত্রই গুলি করার নির্দেশিকা জারি করেছে পাক-সেনা।
ইসলামাবাদের প্রাদেশিক পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার জানিয়েছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন পুলিশের এক কর্মকর্তা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন আরও দুই পুলিশ কর্মী। সরকারি হিসাবে এখনও পর্যন্ত অন্তত ১১৯ জন আহত হয়েছেন। ইসলামাবাদ-সহ গোটা পঞ্জাব প্রদেশ জুড়ে পুলিশের ২২টি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শ্রীনগর হাইওয়ের কাছে নিরাপত্তাকর্মীদের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন ইমরানের কয়েকজন সমর্থক। ওই ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়েছে।
সম্প্রতি কারাবন্দি অবস্থাতেই রাজধানী ইসলামাবাদ-সহ পাকিস্তানের বড় শহরগুলি জুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন প্রাক্তন পাক-প্রধানমন্ত্রী তথা পিটিআই নেতা ইমরান। তাঁর অভিযোগ, তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি, তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে গায়ের জোরে জনাদেশ বদলে ক্ষমতা দখল করেছে শাহবাজ় শরিফের পিএমএল(এন) ও পিপিপি-র জোট সরকার। সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী পাশ নিয়েও আপত্তি জানান ইমরান। এর পরেই ২৪ নভেম্বর দেশ জুড়ে তাঁর দল এবং সাধারণ মানুষের উদ্দেশে পথে নামার ‘শেষ আহ্বান’ জানান ইমরান। তাঁর এই কর্মসূচি ঘোষণার পরেই নড়েচড়ে বসে দেশের শাসক জোট। রাজধানী ইসলামাবাদে পরবর্তী দু’মাসের জন্য জারি হয় ১৪৪ ধারা।