বাংলাদেশে ধৃত সংখ্যালঘু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস। —ফাইল চিত্র।
সংখ্যালঘু নেতা তথা সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারি নিয়ে বাংলাদেশের একাংশ উত্তাল। তার মাঝেই নতুন করে আরও দু’জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হল বাংলাদেশে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ ইন্ডিয়া টুডে টিভিকে জানিয়েছে, ওই দু’জন সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণকে যে মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই সংক্রান্ত তদন্তে সন্দেহভাজন হিসাবে গ্রেফতার হয়েছেন তাঁরা। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে চায়নি বাংলাদেশের পুলিশ।
চট্টগ্রামে নতুন করে ধৃত দুই সন্ন্যাসী হলেন রুদ্রপ্রতি কেশব দাস এবং রঙ্গনাথ শ্যামসুন্দর দাস। তাঁরা সংখ্যালঘু সংগঠন প্রবর্তক সঙ্ঘের সদস্য। সূত্রের খবর, চট্টগ্রামের জেলে ধৃত চিন্ময়কৃষ্ণের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। চিন্ময়কৃষ্ণকে খাবার, ওষুধ এবং কিছু টাকা দিতে গিয়েছিলেন। রাতে সেখান থেকে ফেরার পথে তাঁদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
প্রবর্তক সঙ্ঘের প্রিন্সিপাল স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘‘জেলে চিন্ময়কৃষ্ণকে খাবার দিতে গিয়ে আমাদের দু’জন সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন। ওঁদের ভয়েস মেসেজ থেকেই এই তথ্য জানতে পেরেছি আমি। ওঁরা জানিয়েছে, কোতোয়ালি থানায় তাঁদের আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁদের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়।’’
ইসকন কলকাতার মুখপাত্র রাধারমণ দাস শনিবার রাতে দাবি করেছিলেন, চিন্ময়কৃষ্ণের পর বাংলাদেশে আরও এক সংখ্যালঘু সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শ্যাম দাসের ছবি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘চট্টগ্রাম পুলিশ আর এক ব্রহ্মচারী শ্যাম দাসকে গ্রেফতার করেছে। তিনি কি সন্ত্রাসী? নির্দোষদের গ্রেফতারে ইসকন গভীর ভাবে মর্মাহত।’’ পরে বাংলাদেশ পুলিশ জানায় এক জন নয়, শনিবার রাতে দুই সন্ন্যাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ রয়েছে, স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
গত ৫ অগস্ট বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সংখ্যালঘুদের অধিকারের দাবিতে কথা বলতেন চিন্ময়কৃষ্ণ। একটি সমাবেশে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে গত সোমবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। খারিজ হয়ে যায় জামিনের আবেদনও। তাঁর মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রাম এবং রংপুরে সংখ্যালঘুরা পথে নেমেছেন। তাঁদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক আইনজীবীর মৃত্যু হয় মঙ্গলবার। তার পর থেকে উত্তেজনার পারদ আরও চড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে চেয়ে মামলা হয় হাই কোর্টে। সেই মামলায় বাংলাদেশ সরকার ইসকনকে ‘ধর্মীয় মৌলবাদী সংগঠন’ বলে উল্লেখ করে। যদিও ইসকনকে নিষিদ্ধ করার আবেদন আদালত খারিজ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ পরিস্থিতি এবং সেখানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে নয়াদিল্লিও। কলকাতার রাস্তায় গত কয়েক দিন ধরে চলছে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ।