শেখ হাসিনা। —ফাইল চিত্র।
গণহত্যা-সহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘পর্যাপ্ত’ সাক্ষ্যপ্রমাণ মিলেছে। বুধবার এমনটাই দাবি করেছেন সে দেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখ্য সরকারি আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং গণবিক্ষোভের জেরে গত বছরে ৫ অগস্ট বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হয়। বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে আসেন হাসিনা। বাংলাদেশ ছাড়ার পরে হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা রুজু হয়। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছিল। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’-কে তাজুল জানান, হাসিনার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে এবং এগুলি আদালতে প্রমাণ করার বিষয়েও আশাবাদী তিনি।
বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল নিয়ম অনুসারে, কোনও মামলায় তদন্তের পরে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা প্রথমে মুখ্য সরকারি আইনজীবীর দফতরে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়। সেটি পর্যালোচনা এবং যাচাই করে রিপোর্টটি চূড়ান্ত করে মুখ্য সরকারি আইনজীবীর দফতর। তার পরে সেটি অভিযোগ আকারে ট্রাইব্যুনালে জমা পড়ে। তাজুল জানান, তদন্তকারী সংস্থার চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও তিনি হাতে পাননি। বর্তমানে ওই চূড়ান্ত রিপোর্টটি তৈরি করছেন তদন্তকারীরা।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হওয়ার পরে সে দেশের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শদাতা নুরজাহান বেগম জানিয়েছিলেন, জুলাই এবং অগস্ট মাসে হাসিনা সরকারের মদতে পুলিশি সন্ত্রাসে প্রাণ হারিয়েছেন হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ। বহু মানুষ জখম হয়েছেন। বিভিন্ন মহলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘গণহত্যা’-র অভিযোগ উঠেছে। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় এ নিয়ে হাসিনা-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে সক্রিয় হয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তার পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে বার বার স্পষ্ট করা হয়েছে, বিচারের স্বার্থে হাসিনাকে দেশে ফেরাতে বদ্ধপরিকর তাঁরা।
প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলাগুলির বিচারের উদ্দেশ্যে ২০১০ সালে হাসিনার আমলেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছিল। এই ট্রাইব্যুনালে ইতিমধ্যে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে অনেকের বিচার হয়েছে। ফাঁসি-সহ বিভিন্ন মেয়াদের জেলের শাস্তি কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী সময়ে হাসিনার পতনের পরে পুনর্গঠন করা হয় বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।