Bangladesh Child Rape Case

বাংলাদেশে ৮ বছরের সেই শিশুর মৃত্যু! দিদির শ্বশুরের ধর্ষণ, নিগ্রহ জামাইবাবুর, মাগুরায় কী ঘটেছিল

বাংলাদেশের মাগুরায় আট বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে তার দিদির শ্বশুরের বিরুদ্ধে। তাঁকে সহায়তা করেছেন দিদির স্বামী, শাশুড়ি এবং ভাসুর। তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ১৭:৫৮
এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আট বছরের শিশুর ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার সেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে ঢাকার হাসপাতালে। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) আধিকারিক নাজমুল হামিদকে উল্লেখ করে জানিয়েছে, সকাল থেকে একাধিক বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় শিশুটির। সিপিআর দেওয়ার পর প্রথম বার হৃৎস্পন্দন ফিরলেও দ্বিতীয় বার আর তা ফেরানো যায়নি। দুপুর ১টা নাগাদ তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মাগুরায় দিদির বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল ওই শিশু। কিছু দিন আগে সেখানেই নিজের আত্মীয়দের লালসার শিকার হয় সে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শিশুটির মা লিখিত অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁর বড় মেয়ের শ্বশুর ছোট মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন। এই কাজে তাঁকে সহায়তা করেছেন বড় মেয়ের স্বামী, অর্থাৎ শিশুটির জামাইবাবু। গোটা ঘটনার কথা জানতেন শিশুটির দিদির শাশুড়ি এবং ভাসুর। অভিযোগ, তাঁরা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। শিশুটিকে প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টাও করা হয়। গত বৃহস্পতিবার তাকে অচৈতন্য অবস্থায় মাগুরার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখান থেকে ফরিদপুর হয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিশুকে। শনিবার তাকে স্থানান্তরিত করা হয় সামরিক হাসপাতালে। লাইফ সাপোর্টে শিশুটির চিকিৎসা চলছিল।

মাগুরার এই ঘটনা তোলপাড় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশে। ধর্ষণে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। মৃত্যুদণ্ড দাবি করছেন অনেকেই। ঢাকার রাস্তাতেও চলছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ। শিশুর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ হাই কোর্ট ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছে, ছ’মাসের মধ্যে এই ঘটনার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

শিশুটির দিদি তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, গত বুধবার রাতে খাওয়াদাওয়ার পর বোনকে নিয়ে তিনি এবং তাঁর স্বামী একটি ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাত ২টো নাগাদ ঘুম ভাঙলে তিনি দেখেন, বোন মেঝেতে শুয়ে আছে। সে জানায়, তার যৌনাঙ্গে জ্বালা করছে। ঘুমের ঘোরে বিষয়টির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি দিদি। ভোরে আবার বোন একই কথা বললে তাঁর টনক নড়ে। শিশুটি দিদিকে জানায়, রাতে জামাইবাবু ঘরের দরজা খুলে দিয়েছিলেন। দিদির শ্বশুর ঘর থেকে তাকে তুলে নিয়ে যান। নিজের ঘরে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করেন। তার পর আবার দিদির ঘরে ফেরত দিয়ে যান। এই ঘটনার পরের দিন সকাল থেকে দুই বোনকে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। বাপের বাড়ির কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি শিশুর দিদিকে। পরে শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান দিদির শাশুড়ি। তার পর তিনি হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। পরে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

সূত্রের খবর, মাস চারেক আগেই শিশুর দিদির বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর শ্বশুরের নিগ্রহের শিকার হয়েছিলেন তিনিও। তাঁর শ্বশুরবাড়ির চার সদস্যই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বয়ানে একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement
আরও পড়ুন