খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইজরায়েলি হানায় নিহত ছেলের দেহ জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন প্যালেস্টাইনি বাবা। শনিবার। ছবি: রয়টার্স।
গত কয়েক মাস ধরে প্রবল জ্বালানি সঙ্কট চলছে গাজ়া ভূখণ্ডে। পরিস্থিতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, অবিলম্বে গাজ়ায় জ্বালানির ট্রাক ঢুকতে না দেওয়া হলে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এখানকার সব হাসপাতালকে হয় পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে হবে, না হলে পরিষেবার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে। হামাস-পরিচালিত গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডিরেক্টর মারওয়ান আল-হামস গত কাল সংবাদমাধ্যমকে এ খবর জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
গত কয়েক মাস ধরেই গাজ়ার বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে উত্তর গাজ়ায় লাগাতার অভিযান চালাচ্ছে ইজ়রায়েলি সেনাবাহিনী। খাবার, ওষুধ, জ্বালানি-সহ যাবতীয় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের গাজ়ায় প্রবেশের রাস্তাও বন্ধ করে রেখেছে তারা। হামাস-পরিচালিত গাজ়ার প্রশাসন বারবার অভিযোগ করেছে, ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাশাপাশি, গাজ়ার সাধারণ মানুষকে না খেতে দিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনাও করছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকার। জেনিভায় হু-র মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিসের কথায়, ‘‘গাজ়ায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছনো দিন দিন আরও কঠিন হয়ে পড়ছে।’’
এর মধ্যেই গাজ়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, উত্তর গাজ়ার জাবালিয়া এবং বেত লাহিয়ায় গত কাল সারা রাত ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে ইজ়রায়েল। ডজনখানেক প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে সেই জোড়া হামলায়। নিখোঁজও বহু। অনেকেই ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে রয়েছেন বলে আশঙ্কা।
গাজ়া ভূখণ্ডের সঙ্গে লেবাননেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা জারি রেখেছে ইজ়রায়েল। আজ ভোরে রাজধানী বেরুটে পর পর পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইজ়রায়েলি বায়ুসেনা। তার মধ্যে একটি ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়েছে আটতলা একটি বহুতলে। গত কালও বেরুটের দক্ষিণ শহরতলিতে একটি ১১তলা আবাসন ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইজ়রায়েল। লাগাতার বসতি এলাকায় হামলা চালানোর জন্য আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। ইজ়রায়েলের বক্তব্য, হামাসের মতো হিজ়বুল্লাও সাধারণ মানুষকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
লেবাননের সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, সম্প্রতি সিরিয়ায় ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত হয়েছেন আলি মুসা দাকদুক নামে হিজ়বুল্লার প্রথম সারির এক নেতা। ইরাক যুদ্ধ চলাকালীন আমেরিকান সেনাবাহিনীর পাঁচ সদস্যকে খুনের পিছনে মূল মস্তিষ্ক ছিলেন ওই কমান্ডার। কী ভাবে আলি মুসা নিহত হয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়। ওই হামলার মূল নিশানা মুসা-ই ছিলেন কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ইজ়রায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রক বা পেন্টাগন, কেউই মুসার হত্যা নিয়ে মুখ খোলেনি
এখনও।