দখলদারি চলছে তালিবান বাহিনীর। ফাইল চিত্র।
আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা যত সরছে, ততই একের পর এক এলাকা দখল করছে তালিবান। শুক্রবার নিমরোজ প্রদেশের রাজধানী জারঞ্জ শহরের দখল নিয়েছে তালিব বাহিনী। প্রদেশের ডেপুটি গভর্নর রোহ গুল খয়েরজাদ নিজেই সংবাদমাধ্যমকে এ কথা জানিয়েছেন।
খয়েরজাদ শনিবার বলেন, ‘‘ইরান সীমান্তের অদূরে দক্ষিণ-পশ্চিম আফগানিস্তানের শহরটি কার্যত বিনা লড়াইয়ে তালিবান দখল করেছে।’’ নেটমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি এবং ভিডিয়োয় তালিবান জঙ্গিদের ঘুরে বেড়াতে দেখা গিয়েছে জারঞ্জের রাস্তায়। সরকারি সূত্রের খবর, তালিবান বাহিনীর হাতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতেই কার্যত বিনা যুদ্ধে পালিয়ে যায় শহর রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত আফগান সেনা।
মে মাসের শেষ পর্বে আমেরিকা সেনা আফগানিস্তান ছাড়া শুরু করতেই দেশের বিভিন্ন এলাকার দখল নিতে শুরু করেছে তালিবান। বিশেষ ভাবে ইরান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্তান, তুর্কমানিস্তান এবং পাকিস্তান সীমান্ত ঘেঁষা শহরগুলি বিশেষ ভাবে নিশানা করেছে তারা। সীমান্তবর্তী এই শহরগুলি আফগানিস্তানের জাতীয় আয়ের অন্যতম উৎস। তাই এগুলোকেই জঙ্গিরা বিশেষ ভাবে নিশানা করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আফগানিস্তানে সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধ পর্বে এই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কোনও প্রাদেশিক রাজধানী দখল করল তালিবান। সম্প্রতি তালিবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ দাবি করেছেন, তাঁরা এখন উত্তর আফগানিস্তানের বলখ প্রদেশের রাজধানী মাজার-ই-শরিফেরও উপকণ্ঠে পৌঁছে গিয়েছেন। প্রসঙ্গত, আফগানিস্তানের ওই পঞ্চম বৃহত্তম শহর থেকে ইতিমধ্যেই কনস্যুলেট সরিয়ে নিয়েছে ভারত।
এলাকা দখলের পাশাপাশি ব্যক্তিহত্যাও চলছে সমানতালে। শুক্রবার কাবুলের ‘ইনফরমেশন মিডিয়া সেন্টার’-এর ভিতরে ঢুকে সরকারি সংবাদ সংস্থার ডিরেক্টর দাওয়া খান মেনাপলকে গুলি করে খুন করা হয়েছে। তার আগে বুধবার আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লা খান মোহাম্মদির বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল চার ফিদায়েঁ তালিবান জঙ্গি।
হিংসার এই বাড়বাড়ন্তে আফগান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ নিরাপত্তা পরিষদ। পরিষদের বৈঠকে সদস্যরাষ্ট্রগুলি জানিয়ে দিয়েছে, অস্ত্রের জোরে ক্ষমতা দখলকারী কোনও গোষ্ঠীকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠকে আফগান সরকারের প্রতিনিধি গুলাম ইশাকজাই অভিযোগ করেন, তালিবান বাহিনীকে অস্ত্র এবং রসদ দিয়ে সাহায্য করছে পাকিস্তান।