পাক সেনার তরফে জানানো হয়েছে, গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে টিটিপির ঘাঁটিতে অভিযান চলছে। ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে সেনা এবং তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি) গোষ্ঠীর বিদ্রোহীদের গুলির লড়াইয়ের মাঝে পড়ে মৃত্যু হল দুই শিশুর। আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানে শুক্রবার ভোররাতের ওই সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ৮ টিটিপি যোদ্ধাও।
পাক সেনাবাহিনীর ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)–এর তরফে জানানো হয়েছে নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের জ়াঙ্ঘারা এলাকায় টিটিপির ডেরায় বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালানো হয়েছিল। অভিযানে দুই সেনা জওয়ান আহত হয়েছেন বলেও আইএসপিআর–এর মুখপাত্র জানিয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ পাক সেনা এবং ‘কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট’ (সিটিডি)-এর যৌথ বাহিনীর অভিযানে উত্তর ওয়াজিরিস্তানের দত্তা খেল এলাকায় ৮ জন টিটিপি বিদ্রোহীর মৃত্যু হয়েছিল।
পাক সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পরে নভেম্বরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল টিটিপি। বিদ্রোহী ওই পাশতুন গোষ্ঠীর অভিযোগ ছিল, সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক সেনা গোপন অভিযান শুরু করার ফলেই অশান্তি ছড়িয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে। ডিসেম্বরে অভিযান চালিয়ে টিটিপির মূল ঘাঁটি বান্নু জেলা দখল করে পাক সেনা। তার পর থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’তরফের লড়াই চলছে। এমনকি, আফগানিস্তানের তালিবান বাহিনীর সঙ্গেও সীমান্ত সংঘর্ষে জড়িয়েছে পাক সেনা।
দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানেই একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ ছিল টিটিপি-র। বালুচিস্তান প্রদেশের উত্তরাংশেও তাদের প্রভাব রয়েছে। আমেরিকায় ড্রোন হামলায় নিহত জঙ্গিনেতা বায়তুল্লা মেহসুদ প্রতিষ্ঠিত টিটিপি গোষ্ঠী বরাবরই পাক সরকারের বিরোধী। ২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক পড়ুয়াকে খুন করেছিল টিটিপি জঙ্গিরা। একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা। ২০০৯ সালে টিটিপি-র বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাহ-ই-নিজত’ করেছিল পাক সেনা। পাকিস্তানের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সেটিই সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান।