Quetta

পাকিস্তানের বালুচিস্তানে আবার বিদ্রোহীদের হামলা! পুলিশের গাড়িতে বিস্ফোরণ, নিহত ৪

পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বালুচিস্তান প্রাকৃতিক ভাবে সবচেয়ে সম্পদশালী। ধীরে ধীরে তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে বালোচ নাগরিক এবং স্বাধীনতাপন্থী গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৫৭
4 killed, many injured in blast on a road of Quetta, the capital of Balochistan if Pakistan

পুলিশের অনুমান স্বাধীনতাপন্থী কোনও বালোচ সংগঠন এই হামলা চালিয়েছে। ছবি: টুইটার।

আবার বিস্ফোরণের ঘটনা পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশে। সোমবার বালুচিস্তানের রাজধানী কোয়েটার রাস্তায় ওই বিস্ফোরণে ৪ জন নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত ৮ জন। পুলিশের অনুমান স্বাধীনতাপন্থী কোনও বালোচ সংগঠন এই হামলা চালিয়েছে। বালুচিস্তান প্রাদেশিক পুলিশের আধিকারিক শফকত চিমা সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘‘কোয়েটার কন্দহারি বাজারের রাস্তায় রাখা পুলিশের একটি গাড়িকে নিশানা করে বিস্ফোরণ ঘটনা হয়। বাজারের মধ্যে একটি মোটরবাইকে ইম্প্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) রাখা হয়েছিল।’’ তিনি জানান, স্থানীয়দের সাহায্যে পুলিশ হতাহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।

পাক সরকারের অভিযোগ, গত ফেব্রুয়ারিতে একই কায়দায় স্বাধীনতাপন্থী বালোচ ‘জঙ্গিরা’ বরখান প্রদেশে মোটরবাইকে রাখা আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। সেই ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছিলেন। মার্চে কোয়েটায় একই কায়দায় বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ৯ জন পুলিশকর্মীকে নিকেশ করেছিল বালোচ স্বাধীনতা যোদ্ধারা। অন্য দিকে, সোমবার পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবানের হামলায় এক সেনার মৃত্যু হয়।

Advertisement

প্রসঙ্গত, ১৯৪৭ সালের ১১ অগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল দেশীয় রাজ্য কালাত। ১২ অগস্ট কালাতের শাসক মির সুলেমান দাউদ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মেয়াদ ছিল মাত্র ৭ মাস। ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বালুচিস্তানের মানুষের কাছে সেই দিনটা আজও যন্ত্রণার ‘পরাধীনতা দিবস’! ৭ দশক আগে ওই দিনেই পাকিস্তানি সেনা দখল করেছিল বালুচিস্তান। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তৎকালীন শাসককে বাধ্য করেছিল পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হতে। বালুচিস্তানের পরবর্তী ইতিহাস ফের নতুন স্বাধীনতার যুদ্ধের। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস আর কয়েক হাজার মানুষের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার।

পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বালুচিস্তান প্রাকৃতিক ভাবে সবচেয়ে সম্পদশালী। ধীরে ধীরে তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে বালোচ নাগরিকদের। ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরির পরে গত কয়েক বছরে সেই লুট আরও বেড়েছে। পশ্চিম চিনের শিনজিয়াং প্রদেশের কাশগড় থেকে শুরু হওয়া ওই রাস্তা কারাকোরাম পেরিয়ে ঢুকেছে পাকিস্তানে। প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে শেষ হয়েছে বালুচিস্তান প্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে চিন নিয়ন্ত্রিত গ্বদর বন্দরে।

ওই রাস্তা ব্যবহার করেই ইসলামাবাদ এবং বেজিংয়ের শাসকেরা বালুচিস্তানের প্রাকৃতিক সম্পদ লুট করছে বলে ‘বালুচ ন্যাশনালিস্ট আর্মি’ (বিএনএ), ‘বালুচিস্তান লিবারেশন আর্মি’ (বিএলএ)-র মতো স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির অভিযোগ।এমনকি, সম্প্রতি গ্বদর উপকূলের মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে মাছ ধরাও চিনাদের আপত্তিতে বন্ধ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ‘বালুচিস্তানের গাঁধী’ বলে পরিচিত স্বাধীনতাপন্থী নেতা আবদুল কাদির বালোচ বছর কয়েক আগে দিল্লি এসে বলেছিলেন, তাঁরা চান ১৯৭১-এ ভারত যে ভাবে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল, সে ভাবেই পাশে দাঁড়াক বালুচিস্তানের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে বালুচিস্তানের উপর পাক নিপীড়ন বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে সরব হওয়ার আবেদনও জানিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement