অগ্নিদগ্ধ বাড়ি, গাড়ি! ছবি: রয়টার্স।
বাংলাদেশে ‘অভিভাবকহীন’ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের উপর নির্যাতন অব্যাহত। সোমবার থেকে বাংলাদেশ জুড়ে হিংসার ঘটনায় বহু আওয়ামী লীগ কর্মী ও সমর্থক নিহত হয়েছেন। কোথাও ঘরে আগুন লাগিয়ে দিয়ে চলছে লুটতরাজ। রেহাই পাচ্ছেন না শেখ হাসিনার দলের কর্মীদের পরিবারও। বুধবার আওয়ামী লীগের আরও ২৯ জন নেতা-কর্মীর দেহ উদ্ধার হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়া এবং বাংলাদেশ থেকে পলায়নের পর দু’দিন অতিক্রান্ত। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বাড়িঘর ভাঙচুর এবং খুনজখমের ঘটনা থামার নাম নেই। বেছে বেছে খুন করা হচ্ছে তাঁদের। পরিস্থিতি এমনই যে, প্রাণ বাঁচাতে ভারতেও চলে আসছেন কেউ কেউ। ‘দ্য ঢাকা ট্রিবিউন’ জানাচ্ছে, সোমবার সাতক্ষীরায় উন্মত্ত জনতার হাতে নিহত হয়েছেন ১০ জন আওয়ামী লীগ কর্মী। একই দিনে কুমিল্লায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১১ জন, তাঁদের মধ্যে পাঁচ জন কিশোর। প্রাক্তন কাউন্সিলর মোহাম্মদ শাহ আলমের বাড়ি ভস্মীভূত। সেখানে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ছ’জনের। মঙ্গলবার আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন সাংসদ শফিকুল ইসলাম শিমূলের বাড়িতেও। সেখানে চার জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আওয়ামী লীগের যুবলীগের দুই নেতার দেহ উদ্ধার করা হয়েছে সোনাগাজী উপজেলায়। লালমনিরহাট থেকে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুমন খানের বাড়ি থেকে ছয় জনের দেহ মিলেছে। বগুড়াতেও দুই যুবলীগ নেতাকে কুপিয়ে খুন করেছে উন্মত্ত জনতা।
প্রসঙ্গত, হাসিনা ইস্তফা দেওয়ার পরে সবাই আশা করেছিলেন, মৃত্যুমিছিল এ বার বন্ধ হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ঢাকা-সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে মঙ্গলবারও প্রবল ভাঙচুর ও লুটপাট চলেছে। সরকারি দফতরে নির্বিচারে অগ্নিসংযোগ ও হত্যার ঘটনা ঘটেছে। রবি থেকে মঙ্গল, এই তিন দিনে দেশ জুড়ে অসংখ্য হিংসাত্মক ঘটনায় নিহত হয়েছেন শয়ে শয়ে মানুষ। হামলাকারীদের নিশানায় রয়েছেন মূলত আওয়ামী লীগ সমর্থক ও সংখ্যালঘুরা।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় আওয়ামী লীগের প্রধান কার্যালয়েও সোমবার থেকেই চলছে দেদার লুটপাট। সোমবার রাতে ওই দফতরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালে নতুন করে আবার সেখানে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর থেকে আওয়ামী লীগের দফতরে অবাধে লুটপাট শুরু হয়েছে। হাতের কাছে যে যা পাচ্ছেন, নিয়ে যাচ্ছেন ঘরে।