যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়া নগরী। ছবি: রয়টার্স।
সোমবার গাজ়ার আল-নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত একটি স্কুলে ফের ইজ়রায়েলি হামলায় অন্তত ২২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। গাজ়ায় বাস্তুচ্যুত প্যালেস্টাইনিরা এই স্কুলটিকে বিগত কয়েকদিন ধরেই আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করে আসছিলেন।
ইজ়রায়েলের সামরিক বাহিনীর দাবি, নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরের আবু-ওরাইবান স্কুলটিকে হামাস-এর ‘সন্ত্রাসবাদী’রা ডেরা হিসেবে ব্যবহার করছিল। যদিও বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, সেখানে কোনও সশস্ত্র যোদ্ধা পর্যন্ত ছিলেন না। বরং, হতাহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও মহিলা। এ ছাড়া সোমবার মধ্য গাজ়াতেও বিমান হামলা করে ইজ়রায়েলি বাহিনী। এতে মাঘাজি শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গাজ়ায় নতুন করে হামলা জোরদার করতে গত বুধবারই ইজ়রায়েলি উড়োজাহাজ থেকে লিফলেট ফেলে গাজ়া নগরীতে থাকা প্যালেস্টাইনিদের শহর ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। হামাস-শাসিত গাজ়া উপত্যকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যদিও এই নির্দেশ না মানতে আশ্বাস দিয়েছিল গাজ়াবাসীকে। তার পর থেকে গত শুধু গত সপ্তাহেই গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে মানুষ। স্থানীয়দের মতে, সাপ্তাহিক হতাহতের সংখ্যার নিরিখে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখনও পর্যন্ত এটিই যুদ্ধের ‘ভয়াবহতম’ সপ্তাহ।
এই নিয়ে গত আট দিনের মধ্যে পঞ্চম বার গাজ়ার কোনও স্কুলে হামলা চালাল ইজ়রায়েল। গত ৯ জুলাই গাজ়ার আল-আওদাহ বিদ্যালয়ে বোমাবর্ষণ করে ইজ়রায়েলি বিমান। ঘটনায় অন্তত ৩০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, আহতের সংখ্যা ৫৩। গত বৃহস্পতিবারও ইজ়রায়েলের বোমায় গাজ়া ভূখণ্ডে নিহত হয়েছেন ২৫ জন। হত প্যালেস্টাইনিদের দেহ এখনও গাজ়ার বিভিন্ন রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। কেউ মৃতদেহগুলির কাছাকাছি পৌঁছনোর চেষ্টা করলেই গুলি করছে ইজ়রায়েলি স্নাইপার বাহিনী।
বিগত প্রায় ১০ মাস ধরে গাজ়া ভূখণ্ডে বোমাবর্ষণ করে চলেছে ইজ়রায়েল। গাজ়া নগরী কার্যত পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। আল জ়াজ়িরার হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৩৮,৮৪৫। আহত প্রায় ৮৮,২০০। যদিও অন্যান্য সূত্রের মতে, নিহতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১,৮৬,০০০ ছাড়িয়ে থাকতে পারে। কবে থামবে এই মৃত্যুমিছিল, তার কোনও উত্তর নেই।