Saayoni Ghosh in Recruitment Case

১১ ঘণ্টা পার, সায়নীকে এখনও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ইডি দফতরে, কুন্তল-যোগে তলব তৃণমূলের যুবনেত্রীকে

গত মঙ্গলবার তৃণমূল যুবনেত্রীকে ইডির তরফে নোটিস পাঠিয়ে তলব করা হয়েছিল। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে উপস্থিত হন সায়নী ঘোষ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২৩ ১১:২৩
Yuva TMC leader Sayani Ghosh arrives CGO complex on Friday morning as summoned by ED

ইডি দফতরে ঢোকার মুহূর্তে যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে তলব করেছিল ইডি। সেই তলবে সাড়া দিয়ে শুক্রবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে কলকাতায় ইডির সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে উপস্থিত হন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষ। তার পর থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পরেও সিজিওতেই রয়েছেন সায়নী। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে।

গত মঙ্গলবার তৃণমূল যুবনেত্রীকে ইডির তরফে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, শুক্রবার কলকাতায় ইডির সদর দফতর সিজিও কমপ্লেক্সে সকাল ১১টার মধ্যে হাজির হতে হবে সায়নীকে। কিন্তু তার পর থেকেই ‘উধাও’ ছিলেন যুব তৃণমূল নেত্রী। তাঁর দক্ষিণ কলকাতার বিক্রমগড়ের বাড়িতেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যায়নি। সায়নীর ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়া প্রসঙ্গে কুলুপ এঁটেছিল শাসক দলও। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের নেতাদের অনেকে চেয়েও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তাই তিনি হাজিরা দেবেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। তিনি হাজিরা এড়াতে পারেন বলে জল্পনাও তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেই জল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে শুক্রবার ইডির দফতরে পৌঁছন সায়নী।

Advertisement

সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরা দিতে এসে সায়নী বলেন, ‘‘আমি প্রচারের কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমাকে ৪৮ ঘণ্টার নোটিসে ইডি ডেকেছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়েছি। আমি তদন্তে ১০০ শতাংশ সহযোগিতা করব।’’

রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ইডির নজরে কী ভাবে এলেন যুব তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী? ইডি সূত্রে খবর, রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে ধৃত তথা তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের সূত্র ধরেই উঠে এসেছে সায়নীর নাম। কুন্তলের সম্পত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করার সময় সায়নীর নাম উঠে এসেছে বলে ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে। আর সেই বিষয়েই যুব তৃণমূলের সভানেত্রীকে ইডি জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর। কুন্তলের কাছ থেকে সায়নী কোনও আর্থিক সুবিধা পেয়েছিলেন কি না তা-ও জানতে চাইছেন তদন্তকারী। সূত্রের খবর, সায়নীর কোনও অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কুন্তল টাকা দিয়েছিলেন কি না এবং সম্পত্তিতে কোনও বিনিয়োগ করেছিলেন কি না তা দেখা হচ্ছে।

ইডির তরফে এই প্রথম সায়নীকে তলব করা হলেও নিয়োগকাণ্ডের তদন্ত চলাকালীন এর আগেও তাঁর নাম উঠে এসেছে। নিয়োগ মামলায় ধৃত কুন্তলের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা গিয়েছিল সায়নীকে। তখনও নিয়োগ মামলা নিয়ে জট পাকতে শুরু করেনি। কুন্তলও ইডির নজরে আসেননি। কুন্তলের সঙ্গে সায়নীর ছবিও প্রকাশ্যে আসে (সেই ছবির সত্যতা যাচাই করে দেখেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। যদিও সেই প্রসঙ্গ উঠে আসার পর সায়নী জানিয়েছিলেন, তাঁরা দু’জনেই একই দলের সদস্য (বর্তমানে শুধু তিনিই শাসক দলের সদস্য। কুন্তলকে তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছে)। তাই এক মঞ্চে থাকতেই পারেন। উল্টে কুন্তলকে বহিষ্কার করতে চেয়ে সায়নী তৃণমূল নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিলেন বলেও জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যদিও তাঁর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের দাবি, এমন কোনও চিঠি সায়নী দেননি। সবটাই ‘উড়ো খবর’ এবং ‘গুজব’। যুব সভানেত্রীও প্রকাশ্যে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। ইডি সূত্রে খবর, সেই কুন্তলের যোগসূত্র ধরেই নিয়োগকাণ্ডে সায়নীর নাম জড়িয়েছে। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁকে আয়কর জমা দেওয়ার ফাইল এবং সম্পত্তির হিসাব নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। যত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তার তথ্য এবং লেনদেনের নথি আনতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ইদানীং ব্যস্ত রয়েছেন যুব তৃণমূল সভানেত্রী। তৃণমূল সূত্রে খবর, জোরকদমে প্রচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এরই মধ্যে বুধবার সকালে অভিনেত্রীকে ইডির সমন পাঠানোর কথা প্রকাশ্যে আসে। সেই সমনেই সাড়া দিয়ে শুক্রবার ইডি দফতরে হাজিরা দিলেন সায়নী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement