নদিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে একটি বাগান বাঙ্কারের মধ্যে অভিযান বিএসএফের। —নিজস্ব চিত্র।
বিঘাদুই জমি জুড়ে আমবাগান। তার মাঝখানে কয়েকটি ঝুপড়ি বানানো হয়েছে বাগান পাহারা দেওয়ার। সেই জমিতেই মাটির তলায় ছিল মোট চারটি বাঙ্কার। নদিয়ার মাজদিয়া থানা এলাকায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় বাঙ্কারগুলি থেকে পাওয়া গেল প্রায় দেড় কোটি টাকার নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ। মনে করা হচ্ছে, সেগুলো বাংলাদেশ পাচারের লক্ষ্যে মজুত করা হচ্ছিল বাঙ্কারে।
শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছিল বিএসএফের বাঙ্কার অভিযান। শনিবার বিকেলে অভিযানের ‘সমাপ্তি’ ঘোষণা করে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে ৬২,২০০টি নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।
কী ভাবে বাঙ্কারের খোঁজ মিলল? বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি সূত্র মারফত ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কাছে খবর আসে কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার মাজদিয়া থানা এলাকার নাগাটা সীমান্ত এলাকায় প্রচুর পরিমাণে ফেনসিডিল মজুত করে রাখা আছে। তার পর কৃষ্ণগঞ্জের মাজদিয়া সুধারঞ্জন লাহিড়ী মহাবিদ্যালয়ের কাছে একটি আমবাগানে যান টঙ্গী বর্ডার আউটপোস্টের কর্মীরা। শুক্রবার পৌনে ৩টে নাগাদ আমবাগান ঘিরে তল্লাশি শুরু হয়। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় থানায়। তল্লাশি অভিযানে যোগ দেয় পুলিশও। আমবাগান পাহারার জন্য তৈরি কুঁড়েঘরের নীচে মাটি খুঁড়ে সন্ধান মেলে একটি ভূগর্ভস্থ ‘স্টোরেজ’-এর। ঠিক তার পাশেই একটি আমগাছের পাশে মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় একটি বাঙ্কার। বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেয়নি বিএসএফ এবং পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বম্ব স্কোয়াডে। বাড়ানো হয় এলাকার নিরাপত্তা।
শুক্রবার সন্ধ্যা নামার পর তল্লাশি অভিযান থেমে যায়। শনিবার সকাল থেকে আবার শুরু হয় তল্লাশি। এ বার মাটি কাটার যন্ত্র এনে তল্লাশি চালানো হয়। সন্ধান মেলে আরও দুটো বাঙ্কারের। সেখান থেকেও পাওয়া যায় নিষিদ্ধ কাশির সিরাপের বোতল। শনিবার দুপুর ১টা পর্যন্ত তল্লাশিতে প্রচুর নিষিদ্ধ কাশির সিরাপ উদ্ধার হয়েছে। বিএসএফ মনে করছে, সীমান্তের চোরাচালান চক্রের একটি বৃহত্তর পরিকল্পনা আটকে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। তবে জড়িতদের খোঁজ চলছে। দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের বিএসএফের ডিআইজি (জনসংযোগ) নীলোৎপল পাণ্ডে বলেন, “সীমান্ত জুড়ে পাচার চক্রের একটি বড় নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ার বিএসএফের অন্যতম সাফল্য এটি।”