রাজীব কুমার এবং শাহজাহান শেখ। —ফাইল চিত্র।
সন্দেশখালিতে ইডির উপর হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাহজাহান শেখ এখনও ‘পলাতক’। সেই ঘটনার দেড় মাস পরেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা গেল না, তা নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা। এ নিয়ে এ বার মুখ খুললেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। এর দায় তিনি ইডির ঘাড়েই চাপালেন। পাশাপাশি সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা কবের মধ্যে উঠতে পারে, তা নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের পরিকল্পনার কথা জানালেন রাজীব।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে শাহজাহান প্রসঙ্গে রাজীব প্রশ্ন তোলেন, ইডিই তো শাহজাহানের বিরুদ্ধে তদন্ত করছিল। তারা কেন তাঁকে গ্রেফতার করছে না? এর পরেই ডিজির বক্তব্য, রাজ্য পুলিশ যখন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে, ইডিই সেই তদন্ত বন্ধ করিয়ে দিয়েছে। শাহজাহানের শাগরেদ উত্তম সর্দার ও শিবপ্রসাদ হাজরার বিরুদ্ধে শনিবার গণধর্ষণের ধারা যোগ করেছে পুলিশ। সে প্রসঙ্গেও রাজীব জানান, এক মহিলার গোপন জবানবন্দির ভিত্তিতে দু’জনের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ ও খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিজির বক্তব্য, ‘‘৮ ফেব্রুয়ারির আগে আমাদের কাছে সন্দেশখালি থেকে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। তার পর থেকে আমাদের কাছে যা যা অভিযোগ এসেছে, সব কিছুই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সন্দেশখালির মহিলারা নির্ভয়ে পুলিশে কাছে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাতে পারেন।’’
গত সপ্তাহে দফায় দফায় হিংসার ঘটনার পরে সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারি করে পুলিশ। তা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলাও হয়। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে এলাকাভিত্তিক ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে ডিজি জানান, সন্দেশখালিতে আইনশৃঙ্খলা ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশ-প্রশাসন বন্ধপরিকর। এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনা করেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এলাকাভিত্তিক রিভিউ করা হবে। আমরা চাইছি স্বাভাবিক জীবন ফিরে আসুক। তাই যে সব এলাকায় ১৪৪-এর দরকার নেই, সেই সব জায়গায় এক-দু’দিনের মধ্যে ১৪৪ ধারা তোলার প্রক্রিয়া শুরু হবে।’’
কেন এখনও ১৪৪ ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে, তারও ব্যাখ্যা দেন রাজীব। তিনি বলেন, ‘‘কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বিভিন্ন লোক আইন ভাঙার চেষ্টা করছিল। তাই বাধ্য হয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।’’
সন্দেশখালিতে হিংসার ঘটনার আবহে শাহজাহান শেখ ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের জমিজমা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার প্রেক্ষিতে ডিজি বলেন, ‘‘কাল থেকে ভূমি সংক্রান্ত দফতর সন্দেশখালিতে শিবির করবে। তাদের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। একই সঙ্গে পুলিশের কাছেও অভিযোগ জানানো যাবে। আমরা সত্যের সামনে দাঁড়াতে রাজি আছি। যার বিরুদ্ধে যে রকম প্রমাণ পাওয়া যাবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’