কেন্দ্রের যুক্তি, বরাত অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলি পাট বা চটের বস্তা সরবরাহ করতে পারছে না।
চটের বদলে সিন্থেটিক ব্যাগে গম সরবরাহ করতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। এ নিয়ে সঙ্ঘাতের পথে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ শ্রম দফতর। দফতর মনে করছে, এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কাজ হারাতে হবে বহু চটকল শ্রমিককে।
কেন্দ্রীয় সরকার এ বার থেকে গমের জন্য সিন্থেটিক ব্যাগ ব্যবহারের ইঙ্গিত দিয়েছে আগেই। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খুব বেশি দেরিও করতে চায় না কেন্দ্র। রাজ্য শ্রম দফতর সূত্রে খবর, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বুধবার দিল্লিতে কেদ্রীয় খাদ্য ও গণবণ্টন মন্ত্রক বৈঠক ডেকেছে। চটকল মালিকদের সংগঠন ইজমা বা ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন-এর প্রতিনিধিদেরও সেখানে ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকে গমের জন্য ১০০ শতাংশ সিন্থেটিক ব্যাগের বরাত দেওয়া নিয়েই আলোচনা হবে বলে খবর।
কেন্দ্রের যুক্তি, বরাত অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলি পাট বা চটের বস্তা সরবরাহ করতে পারছে না। কিন্তু রাজ্য শ্রম দফতরের বক্তব্য, ঠিক মতো আগাম হিসাব রাজ্যকে দিলে, সরবরাহে কোনও সমস্যা হবে না। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী বেচারাম বলেন, “চটের বস্তার সরবরাহ কম হওয়ার কারণ দেখিয়ে গমের জন্য সিন্থেটিক ব্যাগের বরাত দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে খাদ্যমন্ত্রক। আমরা এটা মানব না। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি।”
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাওয়ার পাশাপাশি, শ্রম সচিব বরুণ রায়কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আলাদা ভাবে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে চিঠি দিতে। রাজ্য সরকার যে এই ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কোনও রকম সমঝোতায় যাবে না তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বেচারাম। তাঁর আশঙ্কা, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে রাজ্যে পাটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত কয়েক হাজার শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়বেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের এমন সিদ্ধান্ত গোটা চটশিল্পের জন্যই অশনি সঙ্কেত বলে মনে করছে রাজ্য। কেন্দ্র এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনও রকম আলোচনা করেনি বলেও জানিয়েছে শ্রম দফতর। দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, কেন্দ্রের এই বৈঠকের কথায় চটশিল্পে আশঙ্কা তৈরি করেছে। গমের জন্য সিন্থেটিক ব্যাগ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে আগামী বছর থেকে চটকলগুলির বরাত অনেকটাই কমে যাবে। উৎপাদন কম হলে তার জের গিয়ে পড়বে শ্রমিকদের উপর। গোটা শিল্পে তখন অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হবে বলে মনে করছে রাজ্য।