Bengal Ration Distribution Case

বালুর পাতে জেলের খাবার, পাঁচ পদে মধ্যাহ্নভোজ মন্ত্রীর, দুপুরে জেলের বিছানায় ‘ভাতঘুম’

প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁকে রাখা হয়েছে ‘পহেলা বাইশ’ সেলে। এই সেলের বাসিন্দা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে অনেকেই।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ১৫:৫১
মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। —ফাইল চিত্র।

জেলে দুপুরের খাবার খেলেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর প্রথম দিনই তাঁর পাতে দেওয়া হল পাঁচ পদ!

Advertisement

রেশন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মন্ত্রীর হাজতবাস শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। সেখানে যে তিনি বাড়ির খাবার খেতে পারবেন না, তা সোমবারই জানিয়ে দিয়েছিল আদালত। সেই মতো মন্ত্রীর ডায়াবিটিসের কথা মাথায় রেখে জেলে তাঁর জন্যে তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ খাবার। জেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার দুপুরে সেই খাবার খেয়েছেন মন্ত্রী। খাওয়ার পর নিজের সেলে ফিরে ঘুমিয়েও পড়েছিলেন তিনি।

দুপুরে খাওয়ার পরের এই ঘুমকে ‘ভাতঘুম’ বলা হয়। জেলে ডায়াবিটিসের রোগী বালুর ভাত না জুটলেও দিবানিদ্রা বা ‘ভাতঘুম’ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে জেল সূত্রে।

প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি জ্যোতিপ্রিয়। তাঁকে রাখা হয়েছে তথাকথিত ‘ভিআইপি সেল’ পহেলা বাইশে। বর্তমানে এই সেলের বাসিন্দা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য থেকে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাও। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে সামান্য প্রাতরাশ করেন রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়। দুপুরে তাঁকে দেওয়া হয় ডাল-রুটি। তবে সঙ্গে তাঁর শারীরিক পুষ্টির খেয়াল রেখে ছিল আরও কিছু পদ।

মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়ের মধ্যাহ্নভোজের থালায় আটার রুটি এবং ডালের পাশাপাশি ছিল, শাকসব্জি, সিদ্ধ ডিম এবং কিছু ফল। ডায়াবিটিসের রোগী জ্যোতিপ্রিয় ওরফে বালুর যাতে জেলের খাবারে পুষ্টি উপাদানে ঘাটতি না হয়, সে কথা মাথায় রেখেই তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ ডায়েট। ঠিক যেমনটি আদালতকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষ। এমনকি, খাবার আগে ইনস্যুলিন ইঞ্জেকশনও দেওয়া হয় মন্ত্রীকে।

রক্তে শর্করার মাত্রার হেরফেরে অসুস্থ হয়ে পড়েন ডায়াবিটিসের রোগীরা। মন্ত্রীর গ্রেফতারির পর সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মমতা বলেছিলেন, ‘‘বালুর (মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে এই নামেই ডাকেন মমতা, পরিচিত মহলেও তাঁকে এই নামেই ডাকা হয়। ) সুগার। কিছু হয়ে গেলে বিজেপি আর ইডির বিরুদ্ধে এফআইআর হবে।’’ পরে শুনানির সময় আদালতে অসুস্থও হয়ে পড়েন বালু। তাঁর অসুস্থতার কথা মাথায় রেখেই ইডির হেফাজতে তাঁকে বাড়ির খাবার খাওয়ার অনুমতি দিয়েছিল ইডি। কিন্তু জেলের নিয়মকানুন আলাদা। তাই জেল হেফাজতে বালুর খাবারের কী ব্যবস্থার হবে, তা জানতে চেয়ে আদালত জবাব চেয়েছিল প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সোমবার তারা জানিয়ে দেন, ডায়াবিটিসের রোগীর বিশেষ খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। জেল সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিশেষ ডায়েট চার্ট মেনেই খাবার দেওয়া হয়েছে বালুকে।

জেল সূত্রে খবর, খাওয়াদাওয়া হয়ে যাওয়ার পর নিজের সেলে ফিরে যান মন্ত্রী। কিছু পরে সেখানে ঘুমোতেও দেখা যায় তাঁকে। উল্লেখ্য, রেশন দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার বালুকে চার দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। জেলে থাকাকালীন বালুকে ইডি জেরা করতে পারবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Advertisement
আরও পড়ুন