মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদীপ ধনখড়। ফাইল চিত্র।
রাজ্য বিধানসভায় মঙ্গলবারের সাংবাদিক বৈঠক এবং রেড রোডে বুধবার প্রজাতন্ত্র দিবসের সরকারি মঞ্চে তাঁর সঙ্গে রাজ্য সরকারের দ্বন্দ্ব ফের সামনে এসেছে। এই আবহে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি বৃহস্পতিবার সকালে নিজের টুইটারে প্রকাশ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। মঙ্গলবার লেখা ওই চিঠিতে রাজ্যপালের অভিযোগ, রাজ্যের কাছে নানা বিষয়ে তথ্য চেয়েও পাচ্ছেন না তিনি। ধনখড়ের দাবি, সংবিধানের ১৬৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী এ বিষয়ে তাঁকে অবহিত করা রাজ্য সরকারের বাধ্যবাধকতার মধ্যে পড়ে।
সাম্প্রতিক কালে পেগাসাস-কাণ্ডে রাজ্য সরকার গঠিত তদন্ত কমিশন, রাজ্যের শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ এবং বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস) আয়োজনের খরচ, মা ক্যান্টিন চালানোর খরচ, গোর্খাল্যান্ড আঞ্চলিক প্রশাসন, এরোট্রোপলিস প্রকল্প, রাজ্য অর্থ কমিশন, অতিমারি পরিস্থিতি বিভিন্ন সরঞ্জাম কেনার খরচ নানা তথ্য রাজভাবনের তরফে চেয়েও মেলেনি বলে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অভিযোগ ধনখড়ের। বিষয়টি নিয়ে আগেও রাজ্যকে চিঠি দিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তাঁকে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর ২২ জানুয়ারির একটি চিঠির প্রসঙ্গেরও উল্লেখ রয়েছে চিঠিতে।
টুইটারে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘রাজ্যপালের চাওয়া তথ্য প্রদান করা রাজ্য সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সরকার তাঁর কাছ থেকে কোনও তথ্যই আড়াল করতে পারে না, এবং এই ধরনের আচরণ হবে সংবিধান লঙ্ঘন। যা উপেক্ষা করা যাবে না।’
Guv Shri Dhankhar has conveyed @MamataOfficial constitutional “duty” to furnish information sought by Governor.
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) January 27, 2022
Guv emphasised that no information whatsoever can be screened from him by govt. & such conduct will be constitutional transgression that shall not be overlooked. pic.twitter.com/D5k2YxwHeP
প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে মঙ্গলবার বি আর অম্বেডকরের মূর্তিতে মাল্যদান করতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। মাল্যদানের পরে সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি-সহ একাধিক বিষয়ে তোপ দাগেন তিনি। ধনখড় বলেন, “বাংলায় ভোটারদের স্বাধীনতা নেই। গণতন্ত্রে ভোটার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় বিপদের মুখে গণতন্ত্র! ‘ভোট পরবর্তী হিংসা’ই সেই ঘটনার প্রমাণ।”
সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের পরিষদীয় ব্যবস্থার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। পাশাপাশি, হুঁশিয়ারি দেন, রাজ্যপালকে অন্ধকারে রেখে অধ্যক্ষ কিছু করলে আইন মেনে পদক্ষেপ করা হবে। ওই সাংবাদিক বৈঠকের পরেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় পাল্টা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসৌজন্যের অভিযোগ তুলেছিলেন। ঘটনাচক্রে, মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা রাজ্যপালের সেই চিঠি সে দিনেরই।
এই আবহে বুধবার রেড রোডের অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল এসে মুখ্যমন্ত্রীর মুখোমুখি হয়েছিলেন। তিনি নমস্কার জানালে মুখ্যমন্ত্রীও প্রতি নমস্কার জানান। তবে রাজ্যপালের প্রতি বিশেষ মনোযোগী বলে মনে হয়নি তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীর দিকে ঝুঁকে রাজ্যপালকে কিছু বলতে দেখা যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সময়েও ‘উদাসীন’ দেখিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখা যায় রাজ্যপালের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য পাশে দাঁড়ানো বিধানসভার স্পিকারকে কাছে ডেকে বসতে বলতে।