গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ
সুপ্রিম কোর্টে কিছুটা স্বস্তি পেলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী রুজিরা নারুলা। মঙ্গলবার কোর্ট জানিয়ে দিল, অভিষেক এবং রুজিরাকে কয়লা-কাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে তা কলকাতাতেই করতে হবে। শুধু তা-ই নয়, শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সস্ত্রীক অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হলে আগে নোটিস পাঠাতে হবে। সেই নোটিস দিতে হবে অন্তত ২৪ ঘণ্টা আগে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টকে অভিষেক জানিয়েছিলেন জিজ্ঞাসাবাদের নামে দিল্লিতে জেরার জন্য ডেকে তাঁদের হেনস্তা করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ে বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ মনে করছে অভিষেকের সেই অভিযোগকেই মান্যতা দিল শীর্ষ আদালত।
মঙ্গলবার ইডিকে দেওয়া বিশেষ নির্দেশে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে অভিষেক এবং রুজিরাকে কলকাতাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তবে একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, যদি কলকাতায় ইডির জিজ্ঞাসাবাস চলাকালীন অভিষেকদের নিরাপত্তা কোনও ভাবে বিঘ্নিত হয় তবে, তার জন্য দায়ী থাকবে রাজ্য সরকার।
গত বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে অভিষেকের তরফে আবেদন করা হয়েছিল, ইডি কেন তাঁদের কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে না। শীর্ষ আদালতে অভিষেকের হয়ে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী কপিল সিব্বল। তখনই সুপ্রিম কোর্ট জানতে চেয়েছিল, সস্ত্রীক অভিষেককে কলকাতায় জেরার সমস্যা কোথায়? এর পরই মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট ইডিকে এই নির্দেশ দিল।
উল্লেখ্য, এর আগে কলকাতাতে এসেও অভিষেক এবং রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। অভিষেকজায়াকে দিল্লিতে তলব করার পর তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর দুই শিশু সন্তানকে ফেলে দিল্লি গিয়ে ইডির সামনে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। যদিও সেই আবেদনে শেষ পর্যন্ত সাড়া দেয়নি ইডি। গত মার্চে ফের সস্ত্রীক অভিষেককে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয় জেরা করার জন্য। অভিষেক তখন দিল্লিতে গেলেও রুজিরা যাননি। দিল্লিতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টে এ ব্যাপারে মামলাও করেছিলেন অভিষেক।
অভিষেকদের মামলার প্রধান যুক্তি ছিল, ইডি আর্থিক নয়ছয় প্রতিরোধ আইনে পশ্চিমবঙ্গের বেআইনি কয়লা পাচারের মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে ডেকে পাঠাচ্ছে। হেনস্থা করার উদ্দেশ্যেই আসলে কোনও ভৌগোলিক সীমানা মানা হচ্ছে না। অভিষেকের মামলার যুক্তি ছিল, অভিষেকের দল কেন্দ্রের শাসক দলকে ভোটে গোহারা হারিয়েছে।তার পরেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের নিশানা করা হচ্ছে। তদন্তের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক সীমানার যে মূল নীতি, তা মানা হচ্ছে না। কোথায় অপরাধ হয়েছে, কোথায় সমন পাঠানো ব্যক্তি থাকেন, তা না দেখেই দিল্লিতে সমন পাঠানো হচ্ছে। কলকাতায় চালু অফিস থাকা সত্বেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দিল্লিতে ডাকা হচ্ছে। মনে হচ্ছে, ইডি দ্রুত তদন্তের থেকে অভিষেক-রুজিরাকে হেনস্থা করতেই বেশি উৎসাহী।