অভিনন্দনের পাশাপাশিই জয়ী সৈনিকদের মমতার পরামর্শ এবং সতর্কবার্তা দিয়েছেন মমতা। গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
জয়ী যে হচ্ছেন, সে ব্যাপারে সারা রাজ্যের কারও কোনও সন্দেহ ছিল না। কৌতূহল ছিল, কী ভাবে জিতবেন। বুধবারের গণনা এবং ফলপ্রকাশের পর যখন দেখা গেল, রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার মধ্যে ১০০টিরও বেশি পুরসভায় এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল, তখন টুইট করে দলের জয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানালেন তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তবে অভিনন্দনের পাশাপাশিই জয়ী সৈনিকদের মমতার পরামর্শ এবং সতর্কবার্তা, ‘এই জয় যেন আমাদের আরও দায়িত্ববান এবং নম্র হতে শেখায়।’ অর্থাৎ বিপুল জয়ের ফলে যেন দলের কর্মীরা অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে না ভোগেন। যেন তাঁরা ভুলে না যান, মানুষের জন্যই তাঁরা এই জায়গায় পৌঁছেছেন। নিজেদের দায়িত্ব পালনে যেন তাঁরা চ্যুত না হন।
বুধবার দুপুর সওয়া ১টা নাগাদ যখন পুরসভা ভোটের গণনা থেকে সম্ভাব্য ফলাফল প্রায় নিশ্চিত, তখন পরপর দু’টি টুইট করেন মমতা। প্রথমে ‘মা-মাটি-মানুষ’কে ধন্যবাদ জানান পুরসভায় তৃণমূলকে বেছে নেওয়ার জন্য। তার পরে তিনি অভিনন্দন জানান পুরভোটে জয়ী দলীয় প্রার্থীদের। সেটা প্রত্যাশিতই ছিল।
Let victory enhance our responsibility and dedication. Let triumph impart humility. Let us together work for peace, prosperity and development of the state.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) March 2, 2022
Jai Bangla!(2/2)
এর পরেই দ্বিতীয় টুইটে মমতা লেখেন, ‘এই জয় যেন আমাদের দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করে। মানুষের প্রতি আমাদের আনুগত্য বৃদ্ধি করে। জয় যেন আমাদের আরও নত হতে শেখায়।’ মমতা লেখেন, ‘আসুন, আমরা একসঙ্গে শান্তিপূর্ণ ভাবে উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করি’। মমতা তাঁর অভিনন্দনজ্ঞাপক টুইট শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ লিখে।
দ্বিতীয় টুইটটি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, পুরভোটের সময় শাসক শিবিরের একাংশের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় গা-জোয়ারি এবং জুলুমের অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রেক্ষিতে মমতার টুইটে ‘নম্রতা’, ‘আনুগত্য’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহারকে অনেকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন। পাশাপাশিই দলের একাংশ বলছে, দলনেত্রী যে কোনও ভোটের ফলাফলের পরেই দলের নেতা-কর্মীদের এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পাশাপাশিই তাঁদের দাবি, পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যে গোলমাল করার অভিযোগ উঠেছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ এবং ভোটে এঁটে উঠতে না-পেরে বিরোধীদের অভিযোগে ফিরিস্তি। বিক্ষিপ্ত কিছু গোলমাল হয়েছে। কিন্তু রাজ্য জুড়ে যে পরিমাণ বুথে ভোট হয়েছে, সেটি তার ১ শতাংশও নয়! ফলে দলনেত্রী মমতার টুইটকে বিরোধীদের অভিযোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না।
মমতা এদিন বলেন, ১১ হাজার ২৫টা বুথে ভোট হয়েছিল। তার মধ্যে ৭টা আটটা বুথে গণ্ডগোলের কথা বলা হয়েছে। পাঁচটা বুথে ইভিএম সমস্যা হয়েছে সেগুলির ইভিএম বদলানো হয়েছে। এ ছা়ড়া দু’টি বুথে রিপোল হয়েছে। গতকালও দমদমে এবং শ্রীরামপুরে রিপোল হয়েছে। বাদ বাকি আর কোনও জেলায় একটি ঘটনাও শুনেছেন?