শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। —নিজস্ব চিত্র।
কী ভাবে আইনি জটিলতা কাটিয়ে এসএলএসটি (নবম-দ্বাদশ) চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ করা যায়, তা নিয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের দ্বারস্থ হল শিক্ষা দফতর। প্রাথমিক ভাবে যে সিদ্ধান্ত শিক্ষা দফতর নিয়েছে তার জন্য রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের অনুমোদন দরকার। তাই এজি-র সঙ্গে আলোচনা যদি ফলপ্রসূ হয়, তা হলে পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এসএলএসটি প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের পর তেমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ।
সোমবার বিকাল ৪টে নাগাদ এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের (নবম-দশম) সঙ্গে বৈঠকে বসেন ব্রাত্য। সেই বৈঠকে ছিলেন তৃণমূল নেতা কুণালও। এর আগে শুক্রবার চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন কুণাল। প্রসঙ্গত, তিনিই চাকরিপ্রার্থীদের তরফে সরকার তথা শিক্ষা দফতেরর সঙ্গে সমন্বয় রাখার কাজ করছেন।
বৈঠক শেষে কুণাল জানিয়েছেন, আইনি জটিলতার কারণে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে। তবে যোগ্য প্রার্থীদের কথা মাথায় রেখে সরকার শীঘ্রই নিয়োগ শুরু হতে পারে। চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষা দফতর একটি ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে। সেই পরিকল্পনা তিনি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে জানাবেন। কুণাল বলেন, ‘‘একটা ব্লুপ্রিন্ট তৈরি করা গিয়েছে। কিন্তু সেটা আইনি বৈধতা সাপেক্ষ। যদি আইনি বৈধতা পাওয়া যায়, তাহলে যোগ্য প্রার্থীদের চাকরির কথা ভেবে, সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে। কিন্তু সেটা আইনি বৈধতা পাবে কি না তা জানার জন্য এজির সঙ্গে বৈঠকে বসা হচ্ছে। আমরা হাই কোর্টে যাচ্ছি। আমাদের ফর্মুলা নিয়ে অ্যাডভোকেট জেনারেল যদি সবুজ সঙ্কেত দেন, তা হলে পুরো বিষয়টি নিয়ে এগোনো যেতে পারে। সরকারও অবিলম্বে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে।’’
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি নিয়োগ নিয়ে এই জটের যাতে নিষ্পত্তি করা যায়। অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছি। যোগ্যরা যাতে নিয়োগ পান, তা সুরাহা করার চেষ্টা করছি।’’
সেই বৈঠকে এসএসসির চেয়ারম্যান এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান থাকবেন বলেও জানিয়েছেন কুণাল।
২০১৬ সালের এসএলএসটি শারীরশিক্ষা ও কর্মশিক্ষা চাকরিপ্রার্থীদের প্যানেল প্রস্তুত হয়ে গেলেও নতুন মামলায় তা আটকে রয়েছে। নিয়োগের বিষয়ে রাজ্য সরকার শূন্যপদও তৈরি করেছিল। এ ব্যাপারটি গোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোচরে আনার কাজ করেছিলেন কুণালই। কিন্তু আইনি জটে সেই নিয়োগ কার্যকর হয়নি।
পর্ষদও হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, এই প্যানেল বৈধ। এর আগে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠকের পর কুণাল বলেছিলেন, ‘‘রেকমেন্ডেশন (সুপারিশ) পেয়ে যাওয়ার পরেও চাকরি দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ, এমন এক জনের নামে মামলা করা হয়েছে, যাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।’’ কুণাল আরও বলেছিলেন, ‘‘কিছু আইনজীবী চাকরিপ্রার্থীদের সর্বনাশ করছেন। আমি চাকরিপ্রার্থীদের ধর্না মঞ্চে গেলে তাঁরা ডেপুটেশন (স্মারকলিপি) দেন। তা আমি দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীকে হোয়াটস্অ্যাপে পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। আন্দোলনকারীদের প্রত্যেকের চাকরি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু আইনজীবী মামলা করে নিয়োগ আটকে দিচ্ছেন। কোর্টের স্থগিতাদেশ না উঠলে নিয়োগ সম্ভব নয়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চান, সবাই চাকরি পান।’’ কুণাল এর আগেও মামলার বিষয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সঙ্গে দেখা করেছিলেন।