Primary Teacher Recruitment

সাড়ে ন’হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের, নির্দেশ ছিল সুপ্রিম কোর্টের

শীর্ষ আদালত জানায়, প্রাথমিকে ১১ হাজার ৭৫৮ শূন্যপদে নিয়োগ করা যাবে। পর্ষদ ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য প্রার্থীতালিকার খসড়া পাঠায়।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৩৮
image of teacher

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে এ বার ২০২২ সালের নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ১১ হাজার ৭৫৮টি শূন্যপদের মধ্যে ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। শীঘ্রই তাঁদের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

প্রাথমিকের ২০২২ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে রাজ্য। প্যানেল প্রকাশেও বাধা তুলে নেয় বিচারপতি হিমা কোহলি, বিচারপতি আসানুদ্দিন আমানুল্লাহ্‌র বেঞ্চ। শীর্ষ আদালত জানায়, প্রাথমিকে ১১ হাজার ৭৫৮ শূন্যপদে নিয়োগ করা যাবে। পর্ষদ ৯ হাজার ৫৩৩ পদে শিক্ষক নিয়োগ করার জন্য প্রার্থীতালিকার খসড়া পাঠায়। এ বার সেই তালিকাই প্রকাশ করল রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

শীর্ষ আদালত ওই নির্দেশ দিতে গিয়ে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশকেও মান্যতা দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড প্রশিক্ষণরতদেরও ইন্টারভিউ এবং অ্যাপটিটিউড টেস্ট প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। তবে তাঁদের প্যানেল এখনই প্রকাশ করা যাবে না। ৯,৫৩৩ জনকে নিয়োগের পর ওই বকেয়া শূন্যপদ খালি রাখতে হবে। আদালতের চূড়ান্ত নির্দেশের উপর তাঁদের নিয়োগ নির্ভর করবে। ২৪ মার্চ পরবর্তী শুনানি।

২০২২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ১১,৭৫৮ পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। সেই সময় প্রথম বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তারা জানায়, যাঁরা চলতি শিক্ষাবর্ষে ডিএলএডের প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, তাঁরাও নিয়োগে অংশ নিতে পারবেন। পর্ষদের ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্ষদের সিদ্ধান্তেই মান্যতা দেন। বিচারপতি পর্যবেক্ষণ ছিল, ২০২০-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রার্থীদের কোর্স শুরু হয়েছে ২০২০ সালের জুন মাসে। তাঁদের দু’বছরের কোর্স সম্পূর্ণ হবে ২০২২ সালের জুন মাসে। অর্থাৎ, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২২ সালে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিনের আগেই তাঁদের সকলের চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা হয়ে যাবে। তাই ওই শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণরত প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে ওই প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দিষ্ট করে কোনও নির্দেশ দেয়নি।

বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ওই নির্দেশ এবং পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেয় হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। গত বছর এপ্রিলে রায় ঘোষণা করে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, জাতীয় শিক্ষক শিক্ষণ পর্ষদ (এনসিটিই)-এর নিয়ম অনুয়াযী, শিক্ষক হতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে এনসিটিই-র নিয়ম মানা হচ্ছে না। কারণ, খাতায়কলমে ২০২২ সালের জুন মাসে কোর্স সম্পূর্ণ হলেও ওই সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা শংসাপত্র পাবেন না। ওই বছর নভেম্বরে শংসাপত্র দেওয়া হবে। ফলে শংসাপত্র ছাড়া তাঁদের যোগ্য বলে বিবেচিত করা করা যায় না। অন্য দিকে, ডিভিশন বেঞ্চে মামলা চলাকালীন নতুন বিজ্ঞপ্তি দেয় পর্ষদ। সেখানে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণরতদের সুযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়।

ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যান ওই শিক্ষাবর্ষের ডিএলএড প্রশিক্ষণরতদের একাংশ। গত বছর ২৮ জুলাই বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ মেধাতালিকা প্রকাশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। সেই থেকে ওই নির্দেশ বহাল থাকে। সোমবার ওই স্থগিতাদেশ তুলে দেয় শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পর্ষদ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। আদালতে জমা দেওয়া ৯ হাজার ৫৩৩ জনের খসড়া প্যানেল অনুযায়ী শিক্ষক নিয়োগ করতে পারবে পর্ষদ। বাকি ২,২২৫ পদ খালি রাখতে হবে। ওই স্থানে মামলাকারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। পাশাপাশি, সর্বোচ্চ আদালত জানায়, আপাতত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবে ওই শিক্ষাবর্ষের প্রশিক্ষণরতরা।

আরও পড়ুন
Advertisement